ইমরান হক বাপ্পি।।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকারের নির্বাচনমুখী প্রক্রিয়ার যে কাজ, সেটি শুরু হয়ে গেছে। নিবাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে বলতে পারেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটি হয়ে গেছে। আজ অথবা আগামীকালের মধ্যে প্রজ্ঞাপন হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে গেলে ভোটার তালিকা করা হবে। ভোটার তালিকা নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন ছিলো। বিগত নির্বাচনগুলো এমনই ভুয়া নির্বাচন ছিল যে, ভোটার তালিকা নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তোলেনি। এবার আমরা ভুয়া নির্বাচন করবো না। এবার সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবো। ফলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে।
গণহত্যা চালানো পর আ.লীগের রাজনৈতিক অধিকার থাকা উচিত কি না, তা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান উপদেষ্টা।
নির্বাচনে আ.লীগ অংশ নিতে পারবে কি না, জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, এটা আমার বলার জায়গা না। এখন আপনি যদি মনে করেন, যারা হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, আরও চল্লিশ-পঞ্চাশ হাজার মানুষকে অঙ্গহানি ঘটিয়েছে, চোখ কেড়ে নিয়েছে, এখনো তারা সেই অপকর্মের পক্ষে কথা বলে।
যদিও ফাঁস হওয়া রেকর্ডটা সঠিক হয়, তাহলে এখনো তাদের নেত্রী ২৮৭ জনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। অন্য দেশে বসে সন্ত্রাসী হুমকি দিচ্ছে, যিনি একটা গণহত্যার মামলার আসামি। বিচারের আগে, দায়মুক্তির আগে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি চালাবে আরও হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করার জন্য? কাজেই সবকিছু একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসবে, বলেন আসিফ নজরুল।
তিনি আরও বলেন, আপনারা বিবেচনা করে দেখেন, একটা গণহত্যা চালানোর পর এখনো একটা দল বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের এত বড় আন্দোলনের নেতাদের কিশোর গ্যাং বলার চেষ্টা করে, আরও মানুষকে হত্যা করার হুমকি দেয়, সেই দলের রাজনৈতিক অধিকার থাকা উচিত কি না, তা প্রতিটি মানুষই বিবেচনা করবেন। বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর দেখা যাবে, তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব দেশেই মৃত্যুদণ্ড রহিত করার কথা বলে জাতিসংঘ। তাদের একটি অপশনাল প্রটোকল আছে। ওই প্রটোকলের মূলকথাই হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড রদ করার জন্য। কিন্তু পৃথিবীর খুব অল্প দেশেই মৃত্যুদণ্ড রদ করেছে। এটা তাদের অঙ্গীকার থেকে বলবেই। কিন্তু আমাদের যে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম, আমাদের যে জুডিসিয়াল কালচার আছে, সেগুলো তো আমাদের কাছে প্রাধান্য পাবে। সবচেয়ে বড় কথা, মৃত্যুদণ্ড রহিত করার যে অপশনাল প্রটোকল, তাতে বাংলাদেশের কোনো সরকারই পক্ষ রাষ্ট্র হয়নি। আমাদের কোনো সরকারের পক্ষ থেকেই এই অপশনাল প্রটোকলের পক্ষরাষ্ট্র হওয়ার বিন্দুমাত্র উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
আসিফ নজরুল বলেন, তাদেরকে বলেছি, আমাদের আইনগত যে সংস্কার, সেটাতে তারা জড়িত আছেন, প্রতিষ্ঠানিক সংস্কারে আমাদের যদি ফরেনসিক সহায়তা লাগে, সেটা তারা দেবেন। আমরা এখানে সুবিচার করবো, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিচার করছি না।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আগের আদালতে যেভাবে হয়েছে, সেভাবে আমরা অবিচার করবো না। আমাদের কোনোকিছু লুকানোর নেই। স্বাগত, যে কেউ এসে, আমরা কীভাবে বিচার করছি, সেটা দেখত পারবেন।’
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!