আমান উল্লা আমান :-
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল তালুকদার বাড়ী এলাকায় একটি সেতুর অভাবে যাতায়াতে গ্রামের হাজারো মানুষ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এমনি চিত্র দেখা মিলে সরজমিনে। সেতু নির্মান না হওয়ায় ক্ষতি গ্রস্হের শিকার হচ্ছে স্হানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থী, গ্রামের সাধারণ মানুষ সহ বিভিন্ন এলাকার পথচারীরা।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল তালুকদার বাড়ী গ্রামে খালের ওপর ভেঙ্গে যাওয়া সেতু কাঠ বাঁশ দিয়ে এলাকার স্হানীয় খেটে খাওয়া মানুষ সেচ্ছাশ্রমে ও নিজ অর্থায়নে কাঠ বাঁশের সেতু নির্মান করলে ও এর কিছু দিন না যেতেই আবার ভেঙে পড়ে। যাতায়াতে জন্য এভাবে প্রতি বছর কাঠ বাঁশের সেতু তৈরী করে স্হানীয়রা। আর এভাবেই ঐ কাঠ বাঁশের সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াতে পার হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতী শিশু শিক্ষার্থী সহ এলাকার সাধারন মানুষ। দীর্ঘ বছর ধরে এলাকাবাসী এভাবে চলাফেরা করলেও সংশ্লিষ্টদের নজরদারী না থাকায় ও সেতু নির্মানে কোন ব্যবস্হা নেওয়া হয়নি এমটার অভিযোগ স্হানীয়দের।
স্হানীয় এলাকাবাসী জানান,এ জরাজির্ন ও ঝুঁকিপূর্ন কাঠ বাঁশের সেতু দিয়ে ঐ গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা নিতে উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স যেতে হয়।স্হানীয় এলাকার পূর্ব ভাওয়াল সরকারি প্রা: বিদ্যালয়, পূর্ব ভাওয়াল হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও কাঁশারা দাখিল মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ঐ ঝুঁকিপূর্ন সেতু দিয়ে যেতে হয়। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের সেবা নিতে ও শাহী বাজার, পাটওয়ারী বাজার,শোল্লা বাজার, মুন্সীরহাট, চৌরঙ্গী বাজার, গল্লাক বাজার ও কামতা বাজারে এ অঞ্চলের মানুষ এ কাঠ বাঁশের সেতু দিয়ে যাতায়াত করে।
ঐ এলাকার প্রাইমারী স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ৮২ বছরের বৃদ্ধা মো: আনোয়ার হোসেন, পূর্ব ভাওয়াল তালুকদার বাড়ীর আবুল কালাম, সৈয়দ আহম্মদ তালুকদার সহ এলাকাবাসী এ প্রতিবেদককে জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা এলাকাবাসী যাতায়াতে জন্য এ খালের উপর নিজস্ব উদ্যোগে সেচছাশ্রমে ও নিজস্ব অর্থায়নে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সেতু তৈরী করে পারাপার হচ্ছি, সাধারনত বর্ষার ভরা মৌসুমে কাঠ ও বাঁশ পানিতে পঁচে বিনষ্ট হয়ে যায় এতে অটো রিকসা, সাইকেল, মটর বাইক ও মানুষ চলাচলে প্রতিনিয়ত ঘটে ছোট বড় দুর্ঘটনা। এছাড়াও স্হানীয় তালুকদার বাড়ীর জুমা মসজিদে এবং ঈদগাহে নামাজ পড়তে এসে মুসল্লীরা ঐ কাঠের পোলের বাঁশ ও কাঠ ভেঙে দুর্ঘটনার শিকার হয়। কিছু দিন পূর্বে একটি যাত্রীবাহী অটোরিকশা সেতু ভেঙে পড়ে গিয়ে দুজন যাত্রী আহত হয়।
পূর্ব ভাওয়াল সরকারি প্রা: বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীতে পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থী আকলিমা কান্না কন্ঠে বলেন, আমরা এ কাঠের সেতুটি দিয়ে খাল পেড়িয়ে স্কুলে যেতে হয় এবং জরাজীর্ণ সেতুতে প্রায় পা পিছলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহোদয়কে একটি পাকা সেতু তৈরী করা জন্য উদাত্ত আহব্বান জানাই। গ্রামবাসী, শিক্ষক, কোমলমতি শিক্ষার্থীর প্রানের দাবি সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টিতে একটি পাকা সেতুই পারে ওই অঞ্চলের কয়েক হাজারো মানুষের চলাচলের ভোগান্তি দুর করতে।
পাইকপাড়া উত্তর ইউপি সদস্য শামীম ব্যাপারী বলেন, পূর্ব ভাওয়াল তালুকদার বাড়ীর এলাকার খালের উপর একটি পাকা সেতুর একান্ত প্রয়োজন। যাতায়াতে এ এলাকার সাধারন মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। একটি পাকা সেতু নির্মাণে যে অর্থ ব্যয় হবে তা ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট নেই। তবে সেতুটি নির্মাণের জোর দাবি জানিয়ে স্হানীয় এমপি ও সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো:আবু পাটওয়ারী বলেন, ভোক্তভোগী গ্রামবাসী সেতুর বিষয়টি আমাকে অবগত করিলে ইতিমধ্যে স্হানীয় এলজিইডি উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলীকে অবগত করেছি। সেতুটি নির্মাণের জন্য কতৃপক্ষ এলজিইডির প্রধান কার্যালয় প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলেই দ্রুত সেতু নির্মানের ব্যবস্হা নেয়া হবে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!