রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের চর বরাট এলাকার পদ্মা নদীর শাখা ক্যানালে আজ রোববার সকালে মাথাবিহীন এক তরুণের মরদেহ ভেসে থাকতে দেখা গেছে। দুপুর ১২টার দিকে দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ যৌথভাবে লাশটি উদ্ধার করে। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, লাশটি নিখোঁজ যুবক জিহাদ সরদারের (২৯)। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার কাসরন্দ গ্রামের সহিদ সরদারের ছেলে। ঢাকার একটি জাহাজ মেরামতের কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত জিহাদ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রামের বাড়ি ফেরেন। সেদিন রাতে চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি। পরদিন তাঁর পরিবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
আজ সকালে স্থানীয় কৃষকরা নদীতে ভাসমান লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। গায়ের পোশাক ও শরীরের চিহ্ন দেখে জিহাদের স্বজনরা লাশটি শনাক্তের দাবি করেন। নিহত জিহাদের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মেঘনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, “আমি প্রথম সন্তানের মা হতে চলেছি। ছেলে হবে জেনে জিহাদ কতটা খুশি ছিল! অথচ আজ তাকে এইভাবে দেখতে হলো।”
স্বজনরা জানান, জিহাদের হাতের পুরনো দাগ, গায়ের পোশাক সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা নিশ্চিত, এটাই তাঁদের জিহাদ। জিহাদের মা ফরিদা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, "ছেলেকে ডাক দিয়ে এনেছে, আর ফিরতে দিল না। শেষবারের মতো ছেলের মুখটাও দেখতে পারলাম না।"
পুলিশ বলছে, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ফরিদপুর পিবিআইয়ের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরিচয় শনাক্তের জন্য কাজ করছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, "মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!