নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার আসমা গ্রামের শুভ চন্দ্র দাসের জীবন যেন এক অপ্রত্যাশিত কঠিন অধ্যায়ের গল্প। তিন বছর বয়সে টাইফয়েড আক্রান্ত হয়ে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধিতার শিকার হওয়া শুভ আজ ১৮ বছরে পা দিয়েছেন, কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে তাকে গৃহপালিত পশুর মতো গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখতে হচ্ছে। না রাখলে সে যেখানে-সেখানে চলে যায়, রাস্তায় ঘোরাফেরা করে, আর তাই দুর্ঘটনা এড়াতে তাকে বেঁধে রাখাই একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবারের জন্য।
শুভের বাবা সুভাষ চন্দ্র দাস গত ৯ বছর আগে মারা গেছেন, চিকিৎসার খরচ মেটাতে শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। এখন তার মা, কল্পনা রানী দাস, দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে জীবনের কঠিন সংগ্রামে লড়াই করে চলেছেন। বড় ছেলে সোহাগ টিউশনি করে যা সামান্য আয় করে, তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চলছে।
পরিবারটি এখন অন্যের জায়গায় একটি পুরনো ঘরে বসবাস করছে, যা বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায়। কল্পনা রানী তার ছেলের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা ও নিজের জন্য বিধবা ভাতার কার্ড পেয়েছেন, তবে দীর্ঘদিন ধরে কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না। কল্পনা রানী বলেন, “শুভকে খিদে লাগলে দড়ি কামড়ে ছিঁড়ে ঘরে এসে খাবার প্লেটে টানাটানি করে। আমি বুঝতে পারি তার প্রয়োজনগুলো, কিন্তু চিকিৎসার অভাবে ও এখনো সুস্থ হয়নি।"
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আশরাফুল আলম রিপন জানান, “পরিবারটি খুবই অসহায়। উপজেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, সরকারি জমিতে একটি স্থায়ী ঘরের ব্যবস্থা করে এই পরিবারটিকে সহযোগিতা করা হোক।”
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!