নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কড়ইতলা এলাকায় বাউলগানের আসর বন্ধ করে বাদ্যযন্ত্র জব্দ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটে।
বাউল সমিতির প্রতিক্রিয়া
আজ বুধবার সন্ধ্যায় মুচলেকা দিয়ে জব্দকৃত বাদ্যযন্ত্রগুলো ফেরত এনেছেন বাংলাদেশ বাউল সমিতির ফতুল্লা শাখার সভাপতি দেওয়ান রাসেল প্রধান।
দেওয়ান রাসেল প্রথম আলোকে জানান, “আমরা বাউলগানের আসর চালাচ্ছিলাম। কিন্তু রাত ১২টার দিকে ওসি ফোর্সসহ এসে গান বন্ধ করে দেন এবং ঢোল, হারমোনিয়াম, ড্রামসহ সংগীতের সরঞ্জাম থানায় নিয়ে যান। আমরা জানতে চাই, আমাদের অপরাধ কী। তখন ওসি বলেন, রাতে আসর বসানোর ফলে চুরি, ছিনতাই এবং মাদকসেবীদের উৎপাত বাড়ছে। তিনি জানান, দিনে গান চালানো যাবে কিন্তু রাতে নয়। অনেক মিনতি করলেও পুলিশ বাদ্যযন্ত্র ফেরত দেয়নি। তবে আজ মুচলেকা দিয়ে আমরা বাদ্যযন্ত্রগুলো ফেরত পেয়েছি।”
পুলিশের ব্যাখ্যা
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনূর আলম জানান, “বাউলগান নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে, রাতে এসব আসরকে কেন্দ্র করে চোর, ছিনতাইকারী এবং মাদকসেবীরা জড়ো হয় বলে আমরা স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়েছি। আমরা আয়োজকদের বলেছি, তাঁরা যদি নিশ্চয়তা দিতে পারেন যে এসব আসরে অপরাধী যাবে না, তাহলে গান চলতে পারে। কিন্তু তাঁরা এর নিশ্চয়তা দিতে পারেননি। এজন্য আমরা গানের আসর বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছি। আমরা বাদ্যযন্ত্র জব্দ করিনি, বরং থানায় নিয়ে এসেছিলাম এবং পরে দিয়ে দিয়েছি।”
পুলিশ সুপারের মন্তব্য
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, “বাউলগানের আসর নিয়ে কিছু স্থানীয় অভিযোগ পেয়েছি। তবে, আমরা এই ধরনের সাংস্কৃতিক আসর বন্ধের পক্ষে নই। শুধু চাই, এসব আসরকে কেন্দ্র করে কোনো পাবলিক নুইসেন্স বা অপরাধমূলক কার্যক্রম যেন না ঘটে। আয়োজকদের সেই অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে।”
সমাধানের সম্ভাবনা
পুলিশের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী বাউলগান চালানোর অনুমতি দেওয়া হলেও রাতে আসর বসানো নিয়ে আপত্তি রয়েছে। আয়োজকদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের আলোচনা ও আরও সুস্পষ্ট নির্দেশনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!