সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার হাওর বেষ্টিত ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মানুষ আর্থিকভাবে অসচ্ছল। যেখানে এসএসসির ফরম পূরণের নির্ধারিত ফির টাকা দিতেই অভিভাবকদের খেতে হচ্ছে হিমশিম। আবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। এমন চিত্র দেখা গেছে ভাটিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষদের দাবি, শিক্ষাবোর্ডে যাতায়াতসহ আনুষঙ্গিক খরচ বহনের জন্য অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে এই টাকা নিচ্ছেন তারা। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, এমন টাকা নেয়ার কোনো নিয়ম নেই বিদ্যালয়ের।
দিরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ কার্যক্রম শুরুর নির্ধারিত সময়ের পর ১শ টাকা জরিমানা দিয়ে আরও কয়েক দিন ফরম ফিলাপ করা যাবে।
কিন্তু শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে তার উল্টো চিত্র পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ টাকা ফরম ফিলাপ বাবদ। বাকি অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ অনলাইন ফি, পরিক্ষার কেন্দ্রে যাতায়াত খরচ, বিভিন্ন চার্জসহ নানা অজুহাত দেখাচ্ছে।
ভাটিপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে।
অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সকল অভিবাবকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। ফরম ফিলাপের নির্ধারিত টাকা ছাড়াও আরও অনেক জায়গায় টাকা খরচ হয়। সেই জন্য একটু বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এলাকার লোকজন বলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এখন একদম তলানীতে পৌঁছে গেছে। অর্থ আদায়ের হরিলুট চলছে আমাদের বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, নির্ধারিত ফি দিতেই আমাদের কষ্ট হয়। সেখানে বাড়তি অর্থ দেওয়া এক প্রকার দুঃসাধ্য। কিন্তু বাধ্য হয়ে দিতে হচ্ছে।
বাজারের প্রবীন ব্যবসায়ী কাজী ফার্মেসির স্বত্বাধিকার আবু তালেব জানান, অনেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম ফিলাপ বাবত অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়েছে। এটা আসলেই অনৈতিক কাজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শাহ আলম দ্বীপ বলেন, আমাদের এলাকার লোকজনের আর্থিক অবস্হা একেবারে নাজুক। এছাড়া এখন দ্রব্যমূলর দাম অস্বাভাবিক তাই সবাই খুবি কষ্টে রয়েছে। এখন সরকার নির্ধারিত ফরম ফিলাপের বাহিরে কোন বেশি অর্থ ছাত্রদের কাছ থেকে নেওয়া একদম ঠিক কাজ হবেনা।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলার শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া মোটেই ভালো কাজ নয়। এধরনের কোন অভিযোগ পাইনি। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে। অর্থ আদায়কারীদের বিরুদ্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!