একসময় ‘ভুতুড়ে পরিবেশে’ ক্লাস চলত, এখন নির্মাণ হচ্ছে আধুনিক ভবন
বছরের পর বছর রাজধানীর বেইলি রোডে থাকা সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যেন হারিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। জরাজীর্ণ টিনের চালা, ফাটল ধরা দেয়াল আর মামলার জটিলতায় প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়েছিল বিদ্যালয়টি। অথচ এখানকার শিক্ষার্থীরা মূলত শ্রমজীবী ও অসচ্ছল পরিবারের সন্তান—তাদের জন্যই এটি ছিল একমাত্র আশ্রয়স্থল।
কিন্তু এখন বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট। বিদ্যালয়টির জায়গায় এখন নির্মিত হচ্ছে আধুনিক ছয়তলা ভবন। ৫.৫৮ শতাংশ জমির ওপর ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ভবনটি বদলে দিতে পারে এই ‘গরিবের বিদ্যালয়’-এর ভবিষ্যৎ।
আদালতের লড়াইয়ের পর আবার আশার আলো
১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ হয় ১৯৭৩ সালে। পরে গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের জায়গায় অবস্থান করা নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা, যা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে বিদ্যালয়টি তার জায়গায় থেকে যাওয়ার অনুমতি পায়, এবং ২০২৩ সালে শুরু হয় ভবন নির্মাণ।
বর্তমান চিত্র: কম শিক্ষার্থী, অস্থায়ী ঘর
এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলছে একটি বেসরকারি স্কুলের ভাড়া করা কক্ষে। মাত্র ৩৩ জন শিক্ষার্থী, পাঁচজন শিক্ষক। উপস্থিতি কম, কারণ অনেক শিক্ষার্থী এখনো ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরেনি। তবে নতুন ভবনে স্থানান্তরের পর ভর্তির হার বাড়বে বলে আশাবাদী শিক্ষকরা।
প্রধান শিক্ষক শম্পা রাণী পাল বলেন, “নতুন ভবনে গেলে আমরা আশপাশের দরিদ্র পরিবারগুলোকে উৎসাহিত করব সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে।”
এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পুনর্জন্ম শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাঁচানোর গল্প নয়, বরং এটি ঢাকার প্রান্তিক মানুষের শিক্ষার আশার গল্প।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!