নিউজ ডেস্ক ।।
ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের বিতর্কিত ভোটার তালিকা দিয়ে চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমীর কমিটি না করার দাবিতে বঞ্চিত সাহিত্যকর্মীরা জেলা প্রশাসককে অভিযোগ দিয়েছে। ১৩ মে বিকেল চারটায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর ফ্যাসিবাদ সরকারের সময়ে বঞ্চিত সাহিত্যকর্মীদের পক্ষে ১৫ জন সাহিত্যকর্মী স্বাক্ষরিত স্মারক লিপি প্রদান করেছে। ফ্যাসিবাদের সময় তৈরিকৃত ভোটার তালিকা দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া জানাজানি হওয়ায় চাঁদপুরে বৈষম্যের শিকার বঞ্চিত সাহিত্যকরা এই স্মারক লিপি প্রদান করেন।
বঞ্চিত সাহিত্যকর্মীরা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, নিষিদ্ধ ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রস্তুতকৃত জেলা প্রশাসক কর্তৃক স্বাক্ষরিত চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির একটি খসড়া সদস্য ভোটার তালিকা গত ১৭ মার্চ ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে চাঁদপুরের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
সাহিত্য একাডেমীর সদস্য ও ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য উক্ত খসড়া সদস্য তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রকাশিত সদস্য তালিকায় চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমীর গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ: এক এর ধারা-২ অনুযায়ী যাদের সাধারণ সদস্য পদ থাকার কথা নয় এবং সাহিত্যে এবং লেখালেখির সাথে ন্যূনতম সম্পর্ক নেই; শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও ফ্যাসিবাদের দোসর বিবেচনায় স্থায়ী সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তৈরি করা চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমীর সদস্য ভোটার তালিকায় চাঁদপুর জেলা বিএনপির বাসভবনে অগ্নিসংযোগ মামলা, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার মামলার পলাতক ও জেলখানায় আটক আসামি রয়েছে। এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে এবং গণহত্যার পক্ষে অবস্থানকারী বিতর্কিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে।
বিগত ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তৈরি করা সাধারণ সদস্যদের ভোটার তালিকায় ব্যক্তি ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ এবং হিংসাত্মক কর্মকান্ডের কারণে অনেক সাহিত্যকর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিগত দুর্নীতিবাজ ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ (পনের) বছরের মধ্যে ভিন্ন মতের কাউকে সাহিত্য একাডেমীতে সদস্য পদ দেওয়া তো দূরের কথা সাহিত্য একাডেমীতে কোন আচার অনুষ্ঠানেও যেতে দেয়নি।
প্রতিষ্ঠাতা সদস্য থেকে শুরু করে অনেক সাধারণ সদস্যকে কোন কারণ দর্শানো ছাড়া সদস্য পদ থেকে বাদ দিয়েছে। এমনকি বাদ দেওয়ার সদস্যদের নথিপত্র এবং প্রমানাদিও মুছে ফেলেছে। তারা সরাসরি আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত থেকে সাহিত্য একাডেমীকে একচ্ছত্রভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এরা দুর্বৃত্ত দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিবাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।
এছাড়াও দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকার পতনে ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান করে আন্দোলনের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছে। এসব অবৈধ বিতর্কিত সদস্যদের বাদ দেওয়ার জন্য নির্দেশিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রমাণাদিসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে আবেদন ও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু দুঃখের সাথে পরিলক্ষিত হয়েছে যে, সম্প্রতি চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমীর কার্যকরী পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে আহ্বান করার সাধারণ সভার সদস্য ভোটার তালিকা এসব অবৈধ বিতর্কিতদের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে!
যা চাঁদপুরের সাহিত্যকর্মী ও ছাত্র-জনতাকে অবাক, বিস্ময় ও সংক্ষুব্ধ করেছে। অথচ, ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের রক্তের বিনিময়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ মুক্ত নতুন বাংলাদেশে যোগ্যতা থাকার পরেও রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে হিংসাত্মকভাবে যাদেরকে সদস্য করা হয়নি তারা সদস্য হওয়ার জন্য আপনার আহবানে আবেদন করা সত্বেও তাদেরকে সদস্য করা হয়নি! যা সাহিত্য কর্মী ও চাঁদপুরবাসীর কাছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, দুরভিসন্ধিমূলক এবং নব্য ফ্যাসিবাদকে পূর্ণবাসনের চক্রান্ত মনে হচ্ছে।
উল্লেখিত বিষয় ও বর্ণনা অনুযায়ী পতিত ও নিষিদ্ধ ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রস্তুতকৃত চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সদস্য তালিকা থেকে গঠনতন্ত্র বহির্ভূত অবৈধ বিতর্কিতদ সদস্যদের বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে ।
পাশাপাশি ব্যক্তি ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ ও হিংসাত্মক কারণে বাদপড়া সাহিত্যকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন সাধারণ সদস্য তালিকা প্রস্তুত পূর্বক কার্যকরী কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
চাঁদপুরের বঞ্চিত সাহিত্যকর্মীদের ওকে দেওয়া শাহরুখ লিপির অনলিপি সচিব, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ , বাংলাদেশ সচিবালয়। সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়। সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়। সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়। সভাপতি, চাঁদপুর প্রেসক্লাব, চাঁদপুর ও সদস্য সচিব, চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমি ও চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রদান করা হয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!