টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পেরিয়ে ভয়াবহ এক ডাকাতির শিকার হয়েছে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রংপুরগামী আল ইমরান পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস। মঙ্গলবার (২০ মে) রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার ভোর ৫টা পর্যন্ত প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে বাসটি ডাকাতদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এই সময় যাত্রীদের সর্বস্ব লুটের পাশাপাশি নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ উঠেছে।
বাসের চালক, সুপারভাইজার ও কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাসটি রাত ৮টার দিকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রওনা দেয়। সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল ও আশুলিয়া থেকে আরও কিছু যাত্রী তোলা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা এলাকায় পৌঁছানোর পর যাত্রীবেশে থাকা ৮-১০ জন ডাকাত বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।
চালক আবেদ আলীর ভাষ্যমতে, দেশীয় অস্ত্র, ছুরি ও চাপাতি দেখিয়ে চালক ও সুপারভাইজারসহ যাত্রীদের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। পরে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে। এরপর সাভারের চন্দ্রা ও আশুলিয়া পর্যন্ত গিয়ে বাসটি কয়েকবার টাঙ্গাইল ও ঢাকার মধ্যবর্তী এলাকায় চক্কর দেয়।
বাসের যাত্রী জুয়েল মিয়া ও আকাশ মিয়া জানান, ডাকাতরা প্রত্যেক যাত্রীর দেহ ও ব্যাগ তল্লাশি করে মোবাইল, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ সব কিছু লুটে নেয়। বিশেষ করে নারী যাত্রীদের তল্লাশির সময় তাদের কান্নাকাটি ও কাকুতি-মিনতির শব্দে বোঝা যায়, তারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন।
শেষ পর্যন্ত বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টাঙ্গাইল শহরের বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় বাসটি ফেলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। পরে বাসের যাত্রী ও স্টাফদের নিয়ে সদর থানায় যান চালক ও সহকারী।
ঘটনার পর সকালে টাঙ্গাইল সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাসের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন। সদর থানার ওসি তানবীর আহমদ জানান, ঘটনার মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং ডাকাতদের শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই মহাসড়কে আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ইউনিক রয়েলস পরিবহনের একটি বাসে একই ধরনের ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এর আগে ২০২২ সালের ২ আগস্ট কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!