স্টাফ রিপোর্টার - ইমরান হক ।। 
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের বর্ণাঢ্য র‍্যালী ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা বিএনপি কার্যালয় সম্মুখ সড়কে গিয়ে শেষ হয়।

বর্ণাঢ্য এই র‍্যালির নেতৃত্ব দেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতা শেখ
ফরিদ আহমেদ মানিক। এ সময় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সেলিমুল্লাহ সেলিমসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে চাঁদপুর জেলা জাসাসের পরিবেশনায় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর চাঁদপুর জেলার কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। এরপর ছাত্রদল নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কেক কাটা উদযাপন এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

র‍্যালির শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, সকল শহীদের বিচার আমরা চাই। ছাত্রদল সুশংগঠিত। তারা ফ্যাসিবাদ উৎখাতে মাঠে ছিল। আগামীর দেশ ও বিএনপি পরিচালনায় ভূমিকা থাকবে ছাত্রদলের। তাই আগামী দিনের ছাত্রদলের নেতৃত্ব পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের দ্বারাই হবে। আমাদের নেতা তারেক রহমান সেই গাইডলাইন দিয়েছে। আমি জেলা ছাত্রদলের এই সুন্দর আয়োজন থেকে চাঁদপুর বাসীকে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানাই।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতা মানিক আরো বলেন, জুলাই আগস্ট এর আন্দোলনের পর একটি রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে চাঁদপুরে আমাদেরকে অসামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের নামে লেখালেখি করেছে। আমরা দেখেছি, আগস্টের ৫ তারিখের পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে সরকারি সম্পত্তি, মানুষের জান মাল, হিন্দুদের মন্দির পূজা মন্ডপ রক্ষা করেছে।

তখন তারা কিছু প্রতিষ্ঠান দখল করেছে পাঁচ তারিখে। আমরা দেখেছি তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জায়গা জমি দখল করছে। এসব সকল ফিরিস্তি আমাদের কাছে আছে সাংবাদিক ভাইদের কাছেও আছে। কেউ নিজেদেরকে ধোয়া তুলসী পাতা ভাববেন না। আপনাদের অপকর্ম আরেক দলের উপর দেয়ার চেষ্টা করবেন না।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির অনেক শক্তিশালী। সুতরাং আগামী দিনের রাষ্ট্র গঠনের জন্য ছাত্রদল আমাদের ভ্যানগার্ড। আমাদের নেতা তারেক রহমান ভ্যানগার্ড।তারেক রহমানের যোগ্য নেতৃত্বে আগামী দিন এই দেশ পরিচালিত হবে। আমরা একটি সুস্থ নির্বাচনের জন্য গত পনের বছর আন্দোলন করেছি প্রয়োজনে আরো আন্দোলন করবো। সেই লক্ষ্যে ছাত্রদলের সবাইকে মাঠে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিক্ষা, ঐক্য, প্রগতি স্লোগান নিয়ে ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন। দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সুন্দর রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা হবে। তাই আপনারা ছাত্রদল ও তারেক রহমানের উপর আস্থা রাখবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সলিম উল্লাহ সেলিম তাঁর বক্তব্যে বলেন, শুধু জুলাই আগস্টের বিপ্লবীই বড় অর্জন নয়। সবচেয়ে বড় অর্জন আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত। তারপরের অর্জন ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব। তারপর ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন।

এরপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গত ১৭ বছরের লড়াই সংগ্রাম এবং গুম খুনের হাজার মানুষের রক্তের ইতিহাস। তার সাথে যোগ হয়েছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ২৪ এর জুলাই আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের রক্ত ঝরা ইতিহাস। সুতরাং ৭১ থেকে ২০২৪ জুলাই আগস্ট রক্তের বিপ্লব এক এবং অভিন্ন। প্রতিটি বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে তাজা প্রাণের রক্তের বিনিময়ে। অতএব কোন ইতিহাসকে হাঁটো করে দেখার সুযোগ নেই ।
এডভোকেট সেলিম বলেন, বর্তমানে একটি মহল গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তার মধ্যে পতিত সরকার এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিন্দুস্তান। এজন্য আজকে স্লোগান উঠেছে পিন্ডি নয়, দিল্লী নয়। ঢাকা ঢাকা। বাংলাদেশের ঠিকানা ঢাকা ঢাকা।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমান হোসেন গাজীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহবুব আনোয়ার বাবলু, জসিম উদ্দিন খান বাবুল, দেওয়ান মো. সফিকুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনির চৌধুরী, সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান গাজী, ফেরদৌস আলম বাবু, ডিএম শাহজাহান, সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিমুছ সালাম, আক্তার হোসেন মাঝি, এড. হারুনুর রশিদ, এড. জহির উদ্দিন বাবর,শাহজালাল মিশন, আফজাল হোসেন,দপ্তর সম্পাদক হযরত আলী ঢালী, জেলা যুবদল সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, সাধারণ সম্পাদক এড. নুরুল আমিন আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহারসহ জেলা ছাত্রদলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।