ইমরান হক বাপ্পি।।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চাঁদপুর জেলা শাখার কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২ নভেম্বর শনিবার বিকেল ৩টায় চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। তিনি তার বক্তব্য বলেন, শ্রমিকদলকে সুসংগঠিত হয়ে কাজ করতে হবে। যাতে আমাদের অতীতের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম বৃথা না যায়। আমাদেরকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। যাতে আমরা আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারি। এজন্য আপনাদেরকে মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে মানুষের মন জয় করতে হবে। সাধারণ মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। মনে রাখবেন মানুষের ভালোবাসা অর্জন করা ছাড়া কোন ক্ষমতাবানই টিকে থাকতে পারেনি। অতীতের ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাও দীর্ঘ সময় জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি।কাজেই আপনাদেরকে এখন থেকেই মানুষের কাছে যেতে হবে তাদের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। বিএনপি এদেশের মানুষের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে।
তিনি আরো বলেন, ১৯ শে জুলাই নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় পুলিশের গুলিতে চাঁদপুরের শ্রমিক দলের একজন নিহত হয়েছিলো। আমরা তাকে শহীদের মর্যাদা দিয়েছি। শ্রমিক দল আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী সংগঠন। আমরা সব সময় শ্রমিক দলের যেকোনো কর্মকান্ডে সহযোগিতা করেছি আগামীতেও আপনাদের পাশে থাকব।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু।
তিনি তার বক্তব্য বলেন,আজকের এই সভা প্রমান করে চাঁদপুরে শ্রমিক দল কতটা শক্তিশালী।আমরা যে দল করি সেই দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিজেকে শ্রমিক পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন।সারাদেশে আমরা শ্রমিকদের পক্ষে কাজ করতেছি।চাঁদপুর পৌরসভা অন্যায় ভাবে টাকা তোলে।চাঁদপুরে শ্রমিকরা অনেক সমস্যায় আছে।তাদের সহযোগিতা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
চাঁদপুর জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার বিজ্ঞাপন পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম, কেন্দ্রীয় রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এম আর মনজু, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহাবুব আনোয়ার বাবলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক মুনির চৌধুরী, চাঁদপুর পৌর বিএনপি সভাপতি মো. আক্তার হোসেন মাঝি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হারুনুর রশীদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজালাল মিশন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জাহাঙ্গীর হোসেন খান।
এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ইউসুফ আলী খলিফা, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হাই দুলাল, মো. খলিলুর রহমান হাওলাদার, চাঁদপুর সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন মাহমুদ ভূঁইয়া, পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মো.ছোটন বেপারী, হাইমচর উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব সফিউদ্দিন স্বপন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আজিম, হাজীগঞ্জ পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানা, শাহরাস্তি উপজেলা শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু সায়েম, মতলব উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি বাবুল ফরাজী, মতলব পৌর শ্রমিক দলের সদস্য জাকির মোল্লা, মতলব পৌর শ্রমিক নেতা আবু সুফিয়ান, কচুয়া উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক আজিজ আহমেদ মানিক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম বলেছেন, কোন দুর্নীতিবাজ ও হাইব্রিড বিএনপিতে স্থান নেই। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আমরা কি ক্ষমতা এসেছি?ক্ষমতায় আসি নাই। অতএব সাবধান। তারেক রহমান সাহেব আমাদের নেতা । কোন অবস্থাতেই দুর্নীতির সাথে আপোষ করা যাবে না ।
এসময় তিনি আরো বলেন, একদম ক্লিয়ার বলতে চাই । আমাদেরকে শপথ নিতে হবে। আমি দুর্নীতি করবো না কাউকে দুর্নীতি করতে দিব না। সে যেই হোক কোন দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দল গঠন করেছেন।তিনি দুর্নীতিবাজ ছিলেন না। বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতি করেন নাই। তারেক রহমান দুর্নীতি করেন নাই। তাহলে আমি আপনি দুর্নীতি করবো কেন । আজ থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। যে নিজে দুর্নীতি করবো না কাউকে দুর্নীতি করতে দিব না। তিনি বলেন, সবাই বলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১৫ বছর যুদ্ধ করেছে। আমি তা মনে করি না। দেশবাসী জানে শুধু ১৫-১৬ বছরই নয়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে এই আওয়ামী লীগের অন্যায় দুর্নীতি দলীয়করণ অনিয়ম দেশ বিরোধী চক্রান্ত ও আওয়ামী হিন্দুস্তানের দেশ বিক্রি করার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেছে।আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ৪৬ টি বছর বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। আওয়ামী দুঃশাসন এরশাদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। সর্বশেষ এই ১৫ বছর। ৪৬ বছরের মধ্যে বিএনপি ক্ষমতায় ছিল মাত্র ১৩ বছর।আর ৩৩ বছর ছিল বিরোধী দলে। বিরোধী দল থাকা অবস্থায় আমাদের কেউ কি আওয়ামীলীগে গিয়েছে? যায়নি। বিগত ১৫ বছর জুলুম নির্যাতনে কেউ বিএনপি ছেড়ে গিয়েছে। যায়নি।
তিনি আরো বলেন, যদি সত্যিকার অর্থে ২০১৮ সালের নির্বাচন হতো তাহলে এখানকার এমপি কে থাকতো। শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক এমপি থাকতো। কিন্ত সঠিক নির্বাচন হয় নাই। আমাদের ভোটের অভাব নেই কর্মীর অভাব নেই। আওয়ামী পেতাত্তারা আপনাদের ভিতরে ঢুকার চেষ্টা করতেছে । এমনকি বিএনপি'র কেউ কেউ আওয়ামী পেতাত্তাদের বাঁচিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেছে । তাদের ওপেন করার চেষ্টা করতেছি। হুঁশিয়ার করে দিতে চাই। আওয়ামী পেতাত্তারা কোন অবস্থাতেই প্রশাসন বলেন পাবলিক বলেন বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করতে যেন না পারে। যারা বিগত আন্দোলন সংগ্রামে শ্রম ঘাম দিয়েছে তারাই আগামী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে পারবে।
বিএনপি'র কেউ কেউ আওয়ামী পেতাত্তাদের বাঁচিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেছে । তাদের ওপেন করার চেষ্টা করতেছি। হুঁশিয়ার করে দিতে চাই। আওয়ামী পেতাত্তারা কোন অবস্থাতেই প্রশাসন বলেন পাবলিক বলেন বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করতে যেন না পারে। যারা বিগত আন্দোলন সংগ্রামে শ্রম ঘাম দিয়েছে তারাই আগামী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে পারবে।
অ্যাড. সেলিম বলেন, জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই করেছি বারবার আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। কেউ আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করে নাই। কিন্তু আজকে লক্ষ্য করছি । আপনাদেরকে জানাতে চাই। হয়তো আমার এই বক্তব্য শেষ বক্তব্য হতে পারে। আমাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন। কারণ আমি অন্যায় দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলি। এজন্য আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে। অতএব দোয়া করবেন আল্লাহ যেন বাঁচিয়ে রাখে। আর যে হত্যা করতে চায় সে যেন প্রকাশ্যে সামনে দাঁড়িয়ে গুলি করে। সে আহ্বান জানাচ্ছি। আর পিছন থেকে যেন কাপুরুষের মতো হত্যা করা না হয়।
সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলওয়াত করেন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল নোমান।
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন পর চাঁদপুরে শ্রমিক দলের এরকম বিশাল কর্মী সমাবেশ দেখে দলের নেতাকর্মীরা অনেকটা আনন্দিত।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!