‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’—কেন পড়া হয় ও এর প্রকৃত অর্থ
সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতে রয়েছে বহুল পরিচিত বাক্য—‘إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ’। অর্থাৎ, “আমরা তো আল্লাহরই এবং আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব।” অনেকেই মনে করেন, কেবল মৃত্যুর সংবাদ শুনলেই এ বাক্যটি পড়া হয়; তবে আসলে এটি প্রতিটি বিপদ-আপদ ও পরীক্ষার সময় আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ ও ধৈর্যের প্রতীক।
পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৫৫ থেকে ১৫৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের ধৈর্য ধারণে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেন—
“আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, ধন-সম্পদ ও প্রাণহানির মাধ্যমে পরীক্ষা করব। যারা ধৈর্য ধারণ করবে, তাদের জন্য সুখবর রয়েছে। তারা যখন কোনো বিপদে পড়ে বলে, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’—তারাই সৎপথপ্রাপ্ত।”
এ আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, এ বাক্যটি কেবল মৃত্যুর সময় নয়, বরং যে কোনো বিপদ, দুঃখ বা ক্ষতির সময় পাঠ করা উচিত। এতে মানুষ স্মরণ করে যে, সবকিছুই আল্লাহর মালিকানাধীন, আর একদিন তাকেই ফিরে যেতে হবে।
হাদিসের প্রমাণ
হজরত উম্মে সালামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“যে মুসলমান কোনো বিপদে পড়ে এ দোয়া পড়ে: ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফলি খাইরাম মিনহা’ — আল্লাহ তাকে তার বিপদের বিনিময়ে উত্তম কিছু দান করেন।”
(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১৮)
উম্মে সালামা (রা.) নিজেই এ দোয়া পাঠ করেছিলেন স্বামী আবু সালামা (রা.)-এর ইন্তেকালের পর। পরে মহান আল্লাহ তাঁকে রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর স্ত্রী হওয়ার সৌভাগ্য দান করেন।
শিক্ষা ও তাৎপর্য
‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়া শুধু দোয়া নয়, এটি মুমিনের ঈমানের প্রকাশ। বিপদের সময় এই দোয়া পাঠ করলে—
ধৈর্য ও তাওয়াক্কুলের চর্চা হয়
মন শান্ত হয় ও বিপদ সহজে মোকাবিলা করা যায়
আল্লাহর রহমত ও প্রতিদান লাভ করা যায়
আয়াতের আলোকে বার্তা
জীবনের প্রতিটি পরীক্ষায় মুমিনের কর্তব্য হলো ধৈর্য ধরা ও আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া। এ আয়াত আমাদের শেখায়—দুনিয়ার সব কিছুই ক্ষণস্থায়ী, আর চিরস্থায়ী প্রত্যাবর্তন কেবল আল্লাহর কাছেই।
লগইন
‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ যে কারণে পড়া হয় | ছবি সংগ্রহীত
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!