রজব মাস শুরু হলেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ ﷺ রমজান মাসের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। এ কারণে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য রজব মাসকে রমজানের প্রস্তুতির সময় হিসেবে গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি, তওবা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করার শিক্ষা দিয়েছেন প্রিয় নবী ﷺ।
রজব মাস একটি মর্যাদাপূর্ণ মাস। এই মাসে ইবাদতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। মহান আল্লাহ তাআলা এ মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ, হানাহানি ও রক্তপাত নিষিদ্ধ করেছেন। হাদিসে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন—
“আল্লাহ তাআলা আসমান ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকেই বারো মাসে এক বছর নির্ধারণ করেছেন। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি একাধারে জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। আর চতুর্থটি হলো রজব মুদার, যা জমাদিউল আখিরা ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস।”
— সহিহ মুসলিম
মর্যাদার এই মাসটি মুমিনদের জন্য ইবাদতের মাস, বরকত অর্জনের মাস। রাসুলুল্লাহ ﷺ এই মাসে ইবাদতে মনোনিবেশ করতেন, নফল রোজা রাখতেন এবং বেশি বেশি দোয়া করতেন। একই সঙ্গে তিনি তাঁর উম্মতকেও ইবাদত ও দোয়ায় মনোযোগী হতে উৎসাহ দিতেন।
হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ রজব মাসজুড়ে বেশি বেশি আমল করতেন, রোজা রাখতেন এবং রমজানের জন্য নিজেকে মানসিক ও আত্মিকভাবে প্রস্তুত করতেন। তিনি বলেন—
“যে ব্যক্তি রজব মাসে (ইবাদতের মাধ্যমে) জমি চাষ করল না এবং শাবান মাসে (ইবাদতের মাধ্যমে) আগাছা পরিষ্কার করল না, সে রমজান মাসে (ইবাদতের) ফসল তুলতে পারবে না।”
— বায়হাকি
আরেক হাদিসে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন—
“রজব হলো আল্লাহর মাস, শাবান হলো আমার মাস এবং রমজান হলো আমার উম্মতের মাস।”
— তিরমিজি
রজব ও শাবান মাসে নবী ﷺ কী পরিমাণ ইবাদত করতেন, তা উম্মাহাতুল মুমিনিনদের বর্ণনা থেকেই স্পষ্ট। হজরত উম্মে সালমা (রা.) বলেন—
“রমজান ছাড়া রাসুলুল্লাহ ﷺ সবচেয়ে বেশি রোজা রাখতেন শাবান মাসে, এরপর রজব মাসে।”
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন—
“রজব মাস আসলেই রাসুলুল্লাহ ﷺ–এর আমলের আধিক্য দেখে আমরা বুঝতে পারতাম, এটি বিশেষ মর্যাদার মাস।”
কিছু বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ রজব মাসে ১০টি, শাবান মাসে ২০টি এবং রমজান মাসে ৩০টি রোজা রাখতেন।
— দারিমি
লগইন
রজব মাসের ফজিলত | ছবি সংগ্রহীত
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!