রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, খুন ও মাদকের অবাধ কারবারসহ নানা অপরাধে জর্জরিত অবস্থায় এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে থানায় ঘেরাও করেছে। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পুলিশকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হলেও সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিদের তৎপরতা থেমে নেই। উদ্বিগ্ন এলাকাবাসীর অনেকেই এই পরিস্থিতিতে মোহাম্মদপুর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেনেভা ক্যাম্প, কলেজ গেটসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মাদক কারবারিরা প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে। ‘কী লাগবে বড় ভাই’ বলে মাদক বিক্রেতারা যখন তখন খদ্দের ডাকছে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় এক সবজি বিক্রেতা জানান, ক্যাম্পের অনেকে গাঁজা, ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকের ব্যবসা করছে। তারা এতটাই প্রভাবশালী যে স্থানীয় পুলিশও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান জানান, লোকবল সংকটে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় এলাকাটির অপরাধ চিত্র আরও স্পষ্ট হয়। গত শনিবার রাতে জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের দ্বন্দ্বে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এর আগের রাতেই বসিলায় একটি মিনি সুপারশপে অস্ত্রধারীদের প্রকাশ্যে ডাকাতির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা উদ্যান ও মোহাম্মদীয়া হাউজিংয়ে ছিনতাই ও সংঘর্ষের ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব এই সংঘাতের পেছনে কাজ করছে।
অপরাধ পরিস্থিতির লাগাম টানতে সেনাবাহিনী মোহাম্মদপুরের প্রতিটি হাউজিং এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সেনাবাহিনীর ২৩ ইস্ট বেঙ্গলের উপ-অধিনায়ক মেজর নাজিম আহমেদ জানান, সেনা সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতা পেলে এই অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবে বলে আশা করছেন।
মোহাম্মদপুরের এই ভয়ংকর অবস্থা কতটা দ্রুত স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে এলাকাবাসী এখনো সন্দিহান।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!