লিবিয়ায় মুক্তিপণের জন্য অপহরণ হওয়া চাঁদপুরের কচুয়ার ইব্রাহিম ফকিরের স্ত্রী রোজিনা বেগমের দায়ের করা মানবপাচার মামলার আসামি রাকিব হোসেন (২৯) ও মো. মিথুন মিয়াকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চাঁদপুর।
গ্রেপ্তারের পর আসামিদের ২৬ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। রাতে এসব তথ্য গণমাধ্যমকে জানান পিবিআই চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ।
এর আগে ২৪ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ সকাল পর্যন্ত দুই দিন পিবিআই চাঁদপুরের পুলিশ পরিদশর্ক এম শামীম আহমেদের নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেনসহ একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে চুয়াডাঙ্গা ও মানিকগঞ্জ জেলা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে।
পিবিআই চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ জানান, কচুয়া উপজেলার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের শফিবাদ গ্রামের ইব্রাহিম ফকির ও প্রতিবেশী আ. হাকিমকে মানবপাচার চক্রের সদস্যরা লিবিয়া নিয়ে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে আটক করে রেখেছে জানিয়ে রোজিনা বেগম চাঁদপুর মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। পিবিআই মামলাটি তদন্তকালে জানতে পারেন, শফিবাদ গ্রামের বাসিন্দা ও ইতালি প্রবাসী খোরশেদ আলম বাদীর স্বামী ইব্রাহিম ফকির ও প্রতিবেশী আব্দুল হাকিম, ইব্রাহিম মোল্লা ও কবির হোসেনকে অধিক বেতন–ভাতা ও সুযোগ–সুবিধার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ইতালি নেওয়ার কথা বলে অবৈধ পথে লিবিয়া নেয়। সেখানে খোরশেদ আলমের জামাই আসামি রাকিব হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় একটি ভবনের ফ্ল্যাটে আটক করে রাখে। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ বাবদ ১০ লাখ টাকা দাবি করে, অন্যথায় মেরে ফেলার হুমকি ধমকি দিতে থাকে। পরে পরিবারের সদস্যরা ব্যাংকের মাধ্যমে সাড়ে ৫ লাখ টাকা পাঠায়।
অপহরণকারীরা ইব্রাহিম মোল্লা ও কবির হোসেনকে মুক্তি দিলেও ইব্রাহিম ফকিরকে অবশিষ্ট টাকার জন্য মুক্তি না দিয়ে আটক করে রাখে। একপর্যায়ে ইব্রাহিম ফকির গত ১৮ জানুয়ারি অপহরণকারীদের হাতে আটক অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়ায় মৃত্যুবরণ করে।
এ ঘটনার পর আদালতের নির্দেশে কচুয়া থানায় মামলা হলে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়। পিবিআইয়ের উপ–পরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক হোসেনে তদন্ত কাজ পরিচালনা করেন।
সবশেষ পিবিআই চাঁদপুর পুলিশ পরিদর্শক এম শামীম আহমেদের নেতৃত্বে ২৪ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে চুয়াডাঙ্গা ও মানিকগঞ্জ জেলা থেকে রাকিব ও মিথুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!