ঢাকার হাজারীবাগে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন ফটোগ্রাফার নুরুল ইসলাম। উন্নত মানের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁদে ফেলে হত্যা করে টিকটক আসক্ত একদল তরুণ।
১৬ মে সন্ধ্যায় ধানমন্ডির শংকর চৌরাস্তা থেকে ডেকে নিয়ে জাফরাবাদের জাফরাবাদ পুলপাড় এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গতকাল মঙ্গলবার (২০ মে) ঢাকা ও ময়মনসিংহ এলাকা থেকে ১০ জন তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,
"ফটোগ্রাফার নুরুল ইসলামের দুটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সী তরুণ, যারা টিকটকে ভিডিও তৈরি করে। উন্নত মানের ভিডিওর জন্য ক্যামেরার দরকার ছিল বলেই তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।"
কিভাবে ফাঁদ পাতা হয়:
ফটোগ্রাফার নুরুল ইসলামের একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে—‘Nurislam Photographer’। এই পেজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তোলা ছবি পোস্ট করেন তিনি। তরুণদের দলটি এই পেজ ঘেঁটে তাঁকে শনাক্ত করে। ১৫ মে তাঁকে ফোন করে এক বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তুলতে অনুরোধ করা হয় এবং বিকাশে ৫০০ টাকা অগ্রিম পাঠানো হয়।
পরদিন ১৬ মে সন্ধ্যায় একই নম্বর থেকে ফোন দিয়ে তাঁকে ধানমন্ডির শংকর চৌরাস্তায় যেতে বলা হয়। নুরুল ইসলাম তাঁর সহকারী ইমনকে নিয়ে সেখানে যান। দলনেতা নাঈম আহম্মেদ তাঁদের সঙ্গে দেখা করে জাফরাবাদ পুলপাড় এলাকায় যেতে বলেন। সেখানে পৌঁছানোর পরই তরুণদের দলটি রিকশার গতিরোধ করে, ইমন পালিয়ে গেলেও নুরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং তাঁর দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা কারা?
গ্রেপ্তার হওয়া ১০ তরুণ হলেন:
নাঈম আহম্মেদ (দলের মূল নেতা)
শাহীন আকন্দ
শাহীন চৌকিদার
রহিম সরকার
নয়ন আহম্মেদ
রিদয় মাদবর
আব্দুর রাজ্জাক
আনোয়ার হোসেন
শহিদুল ইসলাম
মো. আরমান
তাদের কাছ থেকে দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা, একটি চাপাতি, একটি রামদা ও একটি বড় ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।
হাজারীবাগ থানার ওসি জানান, নিহত নুরুল ইসলামের বড় ভাই ওসমান গনি বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!