বরগুনা জেলার ৬টি উপজেলায় ৪২টি ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত গ্রাম আদালতের বিচার কার্যক্রম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। স্বল্প খরচে গ্রাম আদালতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হলে জেলা-উপজেলা আদালতের মামলার জট অনেকটা কমে যাবে এবং লাঘব হবে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ। কিন্তু গ্রাম আদালতের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে এখনও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হয়নি বরগুনা জেলার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর।
সূত্রে জানা যায়, বৃটিশ শাসনামলে প্রথম পল্লী স্বায়ত্তশাসন অধ্যাদেশ দিয়ে ১৯১৯ সালে তৎকালীন ইউনিয়ন বোর্ডকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তারই ধারাবাহিকতায় বিচারিক ক্ষমতা বাড়িয়ে ১৯৭৬ সালের গ্রাম আদালত বিধিমালা আইনে পরিণত হয় ২০০৬ সালে।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ছোট খাটো বিরোধ স্থানীয় পর্যায় নিষ্পত্তি এবং তারই সাথে খরচ আর দুর্ভোগ কমাতে আইনটিকে আরও শক্তিশালী করে ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয়। বর্তমানে এ আইনে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে চলছে দেওয়ানী, ফৌজদারি ও পারিবারিক বিচার।
গ্রামের আদালতের বিচার কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ার কারণ সম্পর্কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেশীরভাগ ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতের বিচার কার্যক্রম প্রায় নিস্ক্রিয়। যেগুলো চালু আছে তাতেও নেই কোন স্বচ্ছতা। দায়সারাভাবে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়, এমন অভিযোগ বিচার প্রার্থীদের।
বিচার প্রার্থীদের অভিযোগ, গ্রাম আদালতে বিচারকরা প্রায়ই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেন। মামলার পক্ষগুলোকে ম্যানেজ করে টাকা আদায় করেন। এতে বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রাম আদালতের বিচার কার্যক্রমকে সচল করতে এবং বিচারকাজে স্বচ্ছতা আনতে সকল উপজেলার ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের নিয়ে ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করা হবে। এতে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম ও গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হবে। পাশাপাশি গ্রাম আদালতের বিচারকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
গ্রাম আদালতের বিচার কার্যক্রমকে সচল করতে ও বিচারকাজে স্বচ্ছতা আনতে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!