ঢাকার ডেমরায় সাত মাস ধরে এক নারীকে আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল। সোমবার (২০ মে) গ্রেপ্তারের পর তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নোবেল আদালতে দাবি করেছেন, যিনি মামলা করেছেন তিনি তাঁর স্ত্রী এবং চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তবে তাঁর আইনজীবী মো. জসীম উদ্দিন কাবিননামা বা বৈধ কোনো বিবাহের কাগজ আদালতে জমা দিতে পারেননি। আদালত এক্ষেত্রে প্রশ্ন তোলেন, “স্ত্রী হলে প্রমাণ কোথায়?” সরকারি কৌঁসুলি বলেন, “কাবিননামা ছাড়া স্ত্রী দাবি করার কোনো সুযোগ নেই।”
ডেমরা থানার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. মুরাদ হোসেন জানিয়েছেন, অভিযোগকারী নারী ও নোবেলের পরিচয় ফেসবুকে, ২০১৮ সালে। এরপর কথাবার্তার মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ১২ নভেম্বর ওই নারীকে নোবেলের স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ডেকে নেন। পরে তাঁকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করেন। এরপর সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রাখেন এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগীর পরিবার পুলিশের সহায়তায় ওই নারীকে উদ্ধার করে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (OCC) চিকিৎসাধীন।
তদন্তে জানা গেছে, যে বাসা থেকে নারীটিকে উদ্ধার করা হয়, সেটি নোবেলের নানাবাড়ি। সেখানেই ছিল নোবেলের গানের স্টুডিও ও বসবাস। ভিডিও ফুটেজ মূলত সিসি ক্যামেরা থেকে এক আত্মীয় ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
অভিযোগকারী নারী দাবি করেছেন, নোবেল তাঁকে নিয়মিত মারধর করতেন। এমনকি বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে পালিয়ে উপরের তলায় আত্মীয়ের কাছে গেলে, সেখান থেকে টেনে-হিঁচড়ে আবারও নিজের কক্ষে নিয়ে যান। এসময়কার সিসিটিভি ফুটেজও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
অবশ্য নোবেলের এক আত্মীয় দাবি করেছেন, নারীটি নোবেলের স্ত্রী এবং অন্তঃসত্ত্বা। তাদের পারিবারিক ঝামেলা থেকেই এসব ঘটনা ঘটেছে।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার দাবিটি যাচাই করার জন্য ফরেনসিক পরীক্ষার আবেদন জানানো হবে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!