আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার পর তিনজন ব্যক্তি ফিরে এসেছেন, যাদের কোনো হদিস ছিল না। এই ঘটনার পরপরই 'আয়নাঘর' নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়। এর আগেও 'আয়নাঘর' নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, তবে এটি বাস্তবে আছে কিনা, তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু ফিরে আসা ব্যক্তিরা গণমাধ্যমে মুখ খোলার পর জানা গেল, 'আয়নাঘর' সত্যিই রয়েছে, যেখানে মানুষকে গুম করে রাখা হয় এবং নির্যাতন চালানো হয়। ক্ষমতার পরিবর্তনের পর এখন এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ, র্যাব এবং ডিজিএফআইয়ের অন্তত ১৫ জন শীর্ষ কর্মকর্তার নাম এসেছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে যে, এ তালিকা আরও বড় হতে পারে।
এই ১৫ জন কর্মকর্তার মধ্যে কেউ এখনও চাকরিতে আছেন, কেউ অবসরে গেছেন, আর কয়েকজন দেশের বাইরে আছেন। এর মধ্যে 'আয়নাঘর' কাণ্ডে সমালোচিত সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে তাকে বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। তিনি নিজেও আট দিন 'আয়নাঘরে' ছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন।
পুলিশের ওই সূত্রটি জানিয়েছে, 'আয়নাঘর' মূলত ২০০৯ সালে তৈরি করা হয়। এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলের নেতাদের অপহরণ করে বছরের পর বছর ধরে 'আয়নাঘরে' আটক করে রাখত। কিছুক্ষেত্রে, তাদের হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানতেন। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন এবং পুরস্কৃতও হয়েছেন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!