হুমায়ুন কবির, রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তার (সচিব) অফিস কক্ষে আগুন লেগে কম্পিউটারসহ পরিষদের আয় ব্যয়, ভিজিটি কার্ডের জমানো টাকার হিসাব, ইউপি সদস্যদের বকেয়া সম্মানির হিসাবের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল রহস্যজনক আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে চরম ফুঁসে ওঠেছেন ইউপি সদস্যরা।
ইউপি সদস্যদের আনিত অভিযোগে ওই চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের একদিন আগে বুধবার(৩০ এপ্রিল)ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে গিয়ে ইউপি সদস্যদের কাছ থেকে জানা গেছে, তদন্তকে হেরফের করার উদ্দেশ্যে ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা(সচিব) পলাশ চন্দ্র রায় পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ইউপি সদস্য মোঃ রফিক, আলাউদ্দিন,পিয়ারা বেগম ও তাহমিনা আকতার এ দাবি করেন। তারা আরো জানান,চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতির বিভিন্ন অনিয়ম, সম্মানি টাকা আত্মসাৎ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা সকল ইউপি সদস্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছি। গত ২৯ এপ্রিল অভিযোগের তদন্ত হবার কথা ছিল। ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুজন ইউপি সদস্যের অনুপস্থিতির ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে তদন্তের সময় একদিন বাড়িয়ে নেন। আর ঠিক আগের রাতেই ঘটে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। এতে সকলের মনে সন্দেহের দানা বাধে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের নৈশপ্রহরী (চৌকিদার) ফজলুল হক জানান,ওই রাতে আমি পাশের দোকানে টিভি দেখে এসে রাত ৩ টার দিক ঘুমিয়ে পড়ি। ফজরের নামাজের আগে পরিষদ চত্বরের মসজিদের মুয়াজ্জিন ওই অফিসরুম থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে আমাকে জানান। আমি দ্রুত রুমের জানালা খুলে স্থানীয়দের সহায়তায় পানি ঢেলে রুমের ভিতরের আগুন নিভাতে সক্ষম হই।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, আমি অফিস করে বিকালে বাড়ি চলে যাই। ভোর রাতে আমার কক্ষে আগুন লেগেছে সকাল পাঁচটাই ফোন মারফত শুনতে পেয়ে পরিষদে ছুটে আসি। ততক্ষণে নৈশপ্রহরী ও স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলেছে দেখতে পাই। কিন্তু আগুনে পুড়ে কম্পিউটারসহ আনেক নথিপত্র পুড়ে যায়। কিভাবে আগুন লাগলো আমি কিছুই জানিনা বলেও সচিব জানান। এদিকে সট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। তদন্তের ফলাফলকে অন্যদিকে মোড় নেওয়ার জন্য কেউ কেউ এ আগুন লাগাকে রহস্যজনক মনে করছেন। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হেদায়েতুল্লাহ বলেন,আমাদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি হোসেনগাঁও ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি মনতাজ আলীর দায়ের করা ছিনতাইসহ কয়েকটি মামলার আসামি হয়ে এক মাস আগে পুলিশ কাছে ধরা পড়ে বর্তমানে জেলে রয়েছেন। ইউপি সচিবের কাছে আগুনের কথা শুনে আমি পরিষদে ছুটে আসি। এবং থানা পুলিশে খবর দেই। সাথে সাথে ইউএনও এবং ওসি তদন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, আমি থানা পুলিশসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ইউপি সদস্যদের অভিযোগের গঠিত তিন সদস্যের কমিটি এদিন সকালে ইউনিয়ন পরিষদে তদন্তে যান।

ইউএনও আরো জানান,অগ্নিকাণ্ডের বিষয়েও উপজেলা প্রকৌশলী, পল্লী বিদ্যুৎ এর ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার
ও ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসারসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। একইসাথে এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যানকে থানায় মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!