অভিবাসন ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর ও সমন্বিত করতে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) যৌথভাবে ‘অভিবাসন ম্যানুয়াল’ প্রণয়ন করেছে। একই অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ অভিবাসন স্ন্যাপশট রিপোর্ট ২০২৪’।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘উন্নত অভিবাসনে জ্ঞানভিত্তিক উদ্যোগ’ শীর্ষক এক উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে এই দুটি প্রকাশনার উন্মোচন করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক দিকনির্দেশনায় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডার ইমিগ্রেশন রিফিউজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ (আইআরসিসি) ও ইতালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় এ ম্যানুয়ালটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
এটি বাংলাদেশের অভিবাসন খাতে প্রথম পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত তথ্যভিত্তিক প্রকাশনা হিসেবে তৈরি হয়েছে। ম্যানুয়ালটি নীতিনির্ধারক, বাস্তবায়নকারী ও গবেষকদের জন্য অভিবাসন ব্যবস্থাপনা ও প্রশিক্ষণের ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।
ম্যানুয়ালটিতে মোট ১৫টি বিস্তারিত মডিউল রয়েছে, যেখানে অভিবাসন সম্পর্কিত মূল ধারণা, জাতীয় ও বৈশ্বিক নীতি কাঠামো (যেমন—গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর সেফ, অর্ডারলি অ্যান্ড রেগুলার মাইগ্রেশন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ) এবং জেন্ডার, সুরক্ষা ও মানবাধিকারের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ‘বাংলাদেশ অভিবাসন স্ন্যাপশট রিপোর্ট ২০২৪’ দেশের অভিবাসন প্রবণতা, নীতিগত অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ করণীয় তুলে ধরেছে। এতে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত তথ্য একত্র করে অভিবাসন তথ্যব্যবস্থা উন্নয়ন, লক্ষ্যভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও নীতি নির্ধারণে সহায়ক চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শ্রম রপ্তানিকারক দেশ। ২০২৪ সালে দেশটি রেমিট্যান্স আয় করেছে প্রায় ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব আলেয়া আক্তার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এটিএম আব্দুর রউফ মণ্ডল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রধান মিশাল ক্রেইজা। আইওএম-এর আঞ্চলিক পরিচালক ইওরি কাতো ম্যানুয়াল ও রিপোর্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, জাতিসংঘ প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। তারা তথ্যভিত্তিক নীতি, প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে নিরাপদ ও সুশাসিত অভিবাসন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!