ইসরায়েলি হামলা থেকে গাজা উপত্যকার শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। গত ৪৮ ঘণ্টায় এই নিষ্ঠুর হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অর্ধশতাধিক শিশু। রোববার (৩ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এমন মর্মান্তিক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, উত্তর গাজার জাবালিয়া অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় ৫০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের এই নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউনিসেফ।
এদিকে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১৯২ জন। শিশু ও নিরীহ মানুষের উপর এ ধরনের আক্রমণে হতাশা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল।
গাজার অবকাঠামো ধ্বংসের মাত্রা এতটাই বিশাল যে, জাতিসংঘের হিসেবে গাজায় ভবন ধসে এখন পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এই ধ্বংসস্তূপ যদি একত্রে রাখা যায়, তবে তা হবে মিশরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এই ধ্বংসাবশেষ সরাতে প্রতিদিন ১০০টি লরির প্রয়োজন হবে এবং সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে ১৫ বছর সময় লাগতে পারে।
জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থার মতে, ইসরায়েলি হামলায় গাজার মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি, প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে এক-চতুর্থাংশ ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং এক-তৃতীয়াংশ ভবনও ব্যাপকভাবে ভেঙে পড়েছে। এ ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য প্রায় ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমি প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে।
গাজায় জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, "ইসরায়েলি হামলায় গাজার অবকাঠামো যেভাবে ধ্বংস হয়েছে, তা এক কথায় পাগলামি। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে এমন কোনো ভবন নেই, যেখানে বোমা পড়েনি। এই আক্রমণ ভৌগোলিক চিত্র পর্যন্ত বদলে দিয়েছে। যে অঞ্চলে আগে পাহাড় ছিল না, সেখানেও এখন ধ্বংসস্তূপে পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে।”
অন্যদিকে, লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত শুক্রবার দেশজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে ৭১ জন এবং আহত হয়েছে ১৬৯ জন। চলমান সংঘাতে গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৮৬৮ জনে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!