যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে দেওয়া সব ধরনের সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের যুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল হতে পারে, যাতে তিনি ছাড় দিতে বাধ্য হন।
তিন বছর আগে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক আগ্রাসন চালানোর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ছিল ইউক্রেনের প্রধান সামরিক সহায়তাকারী। এখন ট্রাম্প প্রশাসনের হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ লড়াই ও কূটনৈতিক সমঝোতার ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি
যুক্তরাষ্ট্রের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা সামরিক সহায়তা পর্যালোচনা করছেন এবং এটি ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখতে পারে কি না, তা দেখছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেরও একই লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছেন।’
একইসঙ্গে, ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে, যতক্ষণ না ইউক্রেন শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, ততক্ষণ সামরিক সহায়তা বন্ধ থাকবে।
জেলেনস্কিকে পদত্যাগের ইঙ্গিত?
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস মন্তব্য করেছেন যে ইউক্রেনের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে পারে। তাঁর মতে, ‘ইউক্রেনের এমন একজন নেতার প্রয়োজন, যিনি যুদ্ধের অবসানে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় রাজি হবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারবেন।’
এদিকে, সম্প্রতি জেলেনস্কি বলেন, তিনি ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা না পেলে কোনো চুক্তিতে যাবেন না এবং দুঃখপ্রকাশ করবেন না। তিনি ন্যাটো সদস্যপদের বিনিময়ে পদত্যাগের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন, যা ট্রাম্প প্রশাসন প্রত্যাখ্যান করেছে।
ট্রাম্প-জেলেনস্কির উত্তপ্ত সম্পর্ক
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে সাম্প্রতিক বাগ্বিতণ্ডা দুই দেশের সম্পর্কে আরও উত্তেজনা তৈরি করেছে। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচিত খনিজ চুক্তিও বাতিল হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন চায় জেলেনস্কি ক্ষমা চান ও বিনা শর্তে চুক্তি গ্রহণ করুন।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা পুনরায় চালু হবে কি না, তা এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ও ইউক্রেনের কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!