মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্, হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি,
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পরকীয়া প্রেমের জেরে এমরান বাশারকে জবাই করে খুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের ফাঁসি দাবি করে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন নিহতের একমাত্র সন্তান, দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী আফনানসহ পরিবার, স্বজনসহ এলাকাবাসী। শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের সম্মুখে মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত এমরান বাশারের বড় ভাই আব্দুল কাইয়্যুম। তিনি বলেন, পরকীয়া প্রেমের জেরে পরিকল্পিতভাবে ফারজানা আক্তার ও তার প্রেমিক বাবুসহ আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ফারজানা আক্তারের মা নাজমা খানম ও তার বড় বোন মারজান আক্তার। এই প্রেমে মারজান আক্তার তার চাচাতো দেবর সৈয়দ আশেকে এলাহী বাবুকে সহযোগিতা করেছে।
একই সময়ে বক্তব্য দেন, নিহতের বোন আমেনা আক্তার ও খালা ছবুরা বেগম। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মামলার প্রধান আসামিদের গ্রেফতার করায় বক্তব্যের শুরুতেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আব্দুল কাইয়্যুম ও আমেনা আক্তার আরো বলেন, আমার ভাইকে যেভাবে জবাই করে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। আমরা চাই তাদেরও ফাঁসির দিয়ে সেভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক।

এদিকে এমরান বাশার খুনের ঘটনায় পুলিশ মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ আশেকে এলাহী বাবু, দ্বিতীয় আসামি ফারজানা আক্তার ও তার মা নাজমা খানকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছেন। বর্তমানে তারা জেলহাজতে রয়েছেন এবং মামলার অপর আসামি মারজান আক্তারকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন পুলিশ।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৫নং ওয়ার্ড এবং হাজীগঞ্জ বাজারস্থ আমেনা ম্যানশনের ৩য় তলার নিজ ভাড়া বাসায় খুনের শিকার হন সৌদি প্রবাসী এমরান বাশার। তাৎখনিক পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধারসহ তার স্ত্রী ফারজানা আক্তারকে আটক করেন। পরবর্তীতে ঘটনার পরের দিন নিহতের বোন রিনা আক্তার বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৯) দায়ের করেন।
খুনের শিকার এমরান বাশার (৩০) ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের দালাল বাড়ির মো. আবুল বাশারের ছেলে। তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার (২৬) হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের জাখনি গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের মেয়ে। তারা স্বামী-স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া আফনানকে (৮) নিয়ে হাজীগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকেন।
মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ আশেকে এলাহী বাবু (২৮) শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দণি ইউনিয়নের আজাগরা গ্রামের মুন্সী বাড়ির সৈয়দ মাসুদ মুন্সীর ছেলে। অপর আসামিরা হলেন, ফারজানা আক্তার, তার মা নাজমা খানম (৫৫) ও বড় বোন মারজান আক্তার (৩২)।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!