হুমায়ুন কবির,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:কয়েকটি রাস্তার ধারে শত শত আলুর বস্তা ভর্তি, পিকআপ, ট্রাক, ভ্যানগাড়ি, টলি, নসিমন গাড়ি লাইন ধরে একদিন এক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করছে, ক্লান্ত হয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে গাড়ির উপর ঘুমিয়ে পড়েছে অনেকে, কেউ মোবাইল চাপে সময় পার করছে, কোথায় আবার কয়েকজন মিলে গল্প করে সময় পার করছে। অনেকেই রাস্তায় বসেই ইফতারির আয়োজন করছে। সকলের উদ্দেশ্য একটাই কিভাবে আলুর বস্তা হিমাগারে ঢুকানো যাবে। কিন্তু বিপত্তি ওইখানেই হিমাগারে জায়গার তুলনায় আলুর বস্তার আমদানি অনেক বেশি। কারো কারো আলু আবার ঠিকই ভিতরে ঢুকতেছে।
এ যেন এক অদৃশ্য সিন্ডিকেট। এমন ঘটনা কয়েকদিন থেকে চলছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা একমাত্র আলু সংরক্ষণের স্থান সাথী হিমাগারে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে কৃষকদের উৎপাদিত বহুসংখ্যক আলু সংরক্ষণের জন্য বুকিং দিয়ে গত চার, পাঁচ দিন থেকে আলু ঢুকাতে পারছেনা। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে কৃষকরা শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে পৌর শহরের অদূরে ঘুঘুডারা সাথী হিমাগারের সামনে কৃষকদের শত শত আলুভর্তি পিকআপ, ট্রলি, ট্রাক্টর হিমাগারে জায়গার সংকুলানের অভাবে লাইন করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে দেখা গেছে। এতে করে বিশ্ব রোডে দেখা দিয়েছে যানজটের।
চলাচলে ঘটছে বিঘ্ন।কৃষকরা জানান,আলু তারা কর্তৃপক্ষের সাথে ফোনে যোগাযোগের ভিত্তিতে আলু নিয়ে এসেছে। কিন্তু ম্যানেজার এখন বলছে জায়গা নাই। ফলে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
যার কারণে কৃষকের শত শত বস্তা আলুর গাড়ি হিমাগারের গেটের সামনে থেকে বিশ্বরোর্ডে বিশাল লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে কখন ঢুকবে তাদের আলু। উপজেলার কাশিপুর এলাকার প্রভাষক আমান আলী বলেন, ১২৭ বস্তা আলু নিয়ে এসেছি লাইনে আছি, কখন ঢুকাতে পারবো জানিনা। কাউন্সিল বাজারের আব্দুল মোমিন বলেন, ১০০ বস্তা নিয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত আছি ঢিকাতে পারিনি। সেতাবগঞ্জ বোচাগঞ্জ থেকে আসা মানিক বলেন ২৪ বস্তা নিয়ে এসেছি ঢুকাতে পারিনি।
এসব ভুক্তভোগী কৃষকরা আরো জানান, হিমাগার কর্তৃপক্ষ যদি আলু নিতে না পারে তাহলে মাইকিং করে বলে দিতে পারতো, আমরা অন্য হিমাগারে নিয়ে যেতাম। কিন্তু তারা মাইকিং করতেছে হিমাগারের ভিতরে। তাদের ভিতরের মাইকিং কে শুনতে পাবে। বেশিরভাগ আলু রাখতে আসা কৃষক হিমাগার কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন। এ যেন অরাজকতার বেড়াজালে বাঁধা পড়েছেন নিরীহ প্রান্তিক আলু চাষিরা। এ ব্যাপারে হিমাগার ম্যাজার ও একাউন্টটেন্ট জানান,আমরা জায়গা না থাকার কারণে মাইকিং করে দিয়েছি। এরপরও কৃষকরা মানছে না।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!