কুষ্টিয়ায় বিআরবি গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর শ্রমিকরা ১০ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেছেন। মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে হাজারো শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং কারখানায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
দাবির মুখে উত্তাল কারখানা চত্বর
প্লাইউড ও পার্টিকেল বোর্ড উৎপাদনকারী এই কারখানার শ্রমিকরা দাবি করছেন, অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন-ভাতা নির্ধারণ, ওভারটাইম বিল প্রদান, নিয়মিত ছুটির ব্যবস্থা এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে স্থায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশেও
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এই কর্মবিরতি মঙ্গলবার সকাল থেকে আরও ব্যাপক আকার নেয়। প্রতিবাদে কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের একাংশের শ্রমিকেরাও অংশ নেন।
উত্তেজনা ও ধাক্কাধাক্কি
সকালে কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্পনগরীর ফটকে জড়ো হন কয়েক হাজার শ্রমিক। তারা হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে স্লোগান দেন এবং কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রবেশে বাধা দেন। কেউ ঢুকতে চেষ্টা করলে তাকে মারধরের ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে।
চেয়ারম্যানের সামনে স্লোগান
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিআরবি গ্রুপের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান কারখানায় উপস্থিত হন। তিনি গেটের সামনে বসে শ্রমিকদের আন্দোলন প্রত্যক্ষ করেন। কিন্তু শ্রমিকদের ক্ষোভ এতটাই তীব্র ছিল যে, তারা তাঁর সামনেই স্লোগান দিয়ে দাবি পেশ করেন।
মহাসড়ক অবরোধ ও সেনা উপস্থিতি
সকাল ১০টার দিকে আন্দোলনরত শ্রমিকেরা কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। আধাঘণ্টা পর সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে শ্রমিকেরা মহাসড়ক ছেড়ে কারখানার অভ্যন্তরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান।
‘বেতন না বাড়লে কাজ নয়’ — শ্রমিকদের হুঁশিয়ারি
শ্রমিক আবদুল করিম বলেন, “আমাদের সঙ্গে মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। এবার দাবি পূরণ না হলে কাজে ফিরছি না।”
প্রসঙ্গত, গত ৮ মে একই দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছিলেন, তবে মালিকপক্ষের আশ্বাসে তখন আন্দোলন স্থগিত হয়। তবে সেদিন কারখানার কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগও উঠে।
মালিকপক্ষের নীরবতা
এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজের কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “কাঁচামালের সংকটে কারখানা সচল রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো সম্ভব হয়নি।”
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!