বসন্ত আসার সঙ্গে সঙ্গে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঝলমলে পলাশ ফুলের আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে এক চমকের সৃষ্টি হয়। খেলার মাঠ, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্চ , অনুষদের আবাসিক এলাকা, রাস্তার দু'পাশে এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশে শোভা পাচ্ছে লাল ও কমলা রঙের এসব চিত্র এক মনোরম দৃশ্যের অবতারণা।
প্রতি বছর, বসন্তের আগমনের সাথে সাথে এই ফুলগুলি ফোটে, প্রায় এক মাস ধরে ক্যাম্পাসকে তাদের রঙে আচ্ছাদিত করে। পলাশ ফুলের উজ্জ্বল লাল ও কমলা আভা ক্যাম্পাসে এক অতুলনীয় সৌন্দর্য সৃষ্টি করে। তাদের মিষ্টি সুবাস বাতাসের সাথে মিশে যায়, আত্মাকে উজ্জীবিত করে এবং হৃদয়কে আনন্দে উদ্ভাসিত করে। প্রকৃতিপ্রেমীরা এই ফুলের সাথে মুহূর্তগুলি ক্যামেরাবন্দি করে, ফটোগ্রাফে স্মৃতি সংরক্ষণ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা ও কর্মচারীরা এই ফুলের উপস্থিতিতে সান্ত্বনা এবং অনুপ্রেরণা খুঁজে পায়। ঘাসে ঢাকা লনে বিশ্রাম নেওয়া হোক বা ক্লাসের মধ্যে ছুটে যাওয়া, তারা প্রকৃতির প্রদর্শনীর নিখুঁত সৌন্দর্যে মুগ্ধ না হয়ে পারে না। অনেকের কাছে, পলাশ ফুল আশা এবং পুনর্নবীকরণের প্রতীক হিসাবে কাজ করে, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সময়কালে তাদের নিজস্ব বৃদ্ধি এবং রূপান্তরের যাত্রাকে প্রতিফলিত করে।
ক্যাম্পাসের গণ্ডি পেরিয়ে পলাশ ফুলের বার্ষিক প্রস্ফুটনকেও আলিঙ্গন করে স্থানীয় ও দূরদূরান্ত থেকে আসা লোকেদের । তারা ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়ে অবসরে ঘুরে বেড়ায়, পুষ্পের প্রশংসা করে এবং প্রকৃতির উদারতায় ভাগ করে নেওয়ার ফলে উদ্ভূত সম্প্রদায়ের বোধকে লালন করে।
প্রেমিক তার প্রেমিকাকে খুজে পায় পলাশের থোকায়, প্রকৃতিপ্রেমী ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য হাতড়ায় এই কমলায়; খেলার মাঠে প্রাক্টিস করা ক্লান্ত ছেলেটাও ছায়া খোজে, জীবনযুদ্ধে হতাশরাও আশা খোজে এই আগুন রাঙা পলাশের থোকায়। এবছর প্রথম পলাশের দেখা মেলে ৫ ফেব্রুয়ারী বঙ্গবন্ধু হলের পাশের একটা গাছে। প্রকৃতি একটু আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছে তার আগমনী গান। প্রতি বছরের মতো আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাস এবারেও সেজেছে কমলা সুন্দরীর রুপে। এই পলাশ ফুলকে নিয়ে তৈরি হয় অন্য রকমের উন্মাদনা। প্রতিদিন পড়ন্ত বিকালে ভীড় করে সাধারণ শিক্ষার্থী সহ বহিরাগত দর্শনার্থীরা। এই ভালোবাসার ঋতুকে ফ্রেম বন্দী করে নানা পোজে, ফেসবুকে আপলোড দেয় নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করে। এককথায় আমার ক্যাম্পাসের যৌবন ফিরিয়ে দেয় পলাশ ফুল।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!