মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় জয় হলো নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা, আর সবচেয়ে বড় পরাজয় হলো আত্মার কাছে পরাজিত হওয়া। প্রিয় নবী সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই আত্মশুদ্ধির পথ দেখিয়েছেন—যে পথ মানুষকে আল্লাহমুখী করে, অন্তরকে করে বিশুদ্ধ এবং জীবনের প্রতিটি কাজকে করে ইবাদতে পরিণত।
বিস্তারিত:
ইসলাম শুধু বাহ্যিক আমল বা আচার-অনুষ্ঠানের ধর্ম নয়; এটি আত্মার পরিশুদ্ধির ধর্ম। আল্লাহ তাআলা বলেন,
“নিশ্চয়ই সফল হলো সে ব্যক্তি, যে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেছে; আর ব্যর্থ হলো সে, যে আত্মাকে কলুষিত করেছে।” (সুরা শামস: ১০)
প্রিয় নবী সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমি তো প্রেরিত হয়েছি উত্তম চরিত্রের পূর্ণতা সাধনের জন্য।” (মুসনাদে আহমাদ : ৮৯৫২) — যা প্রমাণ করে আত্মশুদ্ধির মূল ভিত্তি হলো চরিত্রের বিশুদ্ধতা।
তিনি আরও বলেন, “নিশ্চয়ই সব কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।” (সহিহ বুখারি: ১) অর্থাৎ বাহ্যিক আমলের মূল্য তখনই, যখন অন্তর বিশুদ্ধ থাকে। নবীজি অহংকার, হিংসা ও রিয়াকে আত্মার রোগ বলেছেন এবং হিংসাকে তুলনা করেছেন আগুনের সঙ্গে, যা কাঠকে জ্বালিয়ে দেয় (সুনানু আবি দাউদ: ৪৯০৩)।
যদিও তিনি ছিলেন পাপমুক্ত, তবুও দিনে সত্তরবারেরও বেশি তওবা করতেন (সহিহ বুখারি: ৬৩০৭)। এটি শেখায়—আত্মশুদ্ধির পথ চলমান, এর কোনো শেষ নেই।
দয়াময় নবী সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যারা দয়াশীল, তাদের প্রতি দয়াশীল হন দয়াময় আল্লাহ।” (সহিহ মুসলিম: ২৭৩৫) দয়া ও ক্ষমাই আত্মশুদ্ধির উচ্চতম রূপ।
তিনি আরও বলেন, “দেহে এক টুকরো মাংস আছে, তা যদি ভালো হয় পুরো দেহ ভালো হয়; আর তা যদি নষ্ট হয়, পুরো দেহ নষ্ট হয়। সেটি হলো হৃদয়।” (সহিহ বুখারি: ৫২)
অতএব, যখন প্রত্যেক মানুষ নিজের হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করবে, তখনই সমাজে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
শেষে নবীজির দোয়া:
اللهم زكِّ نفوسنا تقواها، وزكِّها أنت خير من زكاها، أنت وليها ومولاها
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের প্রাণকে পরিশুদ্ধ করে দাও। তুমি-ই সর্বোত্তম পরিশোধক, তুমি-ই আমাদের অভিভাবক ও সহায়। (সহিহ মুসলিম: ২৭২২)
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!