ইমরান হক স্টাফ রিপোর্টার।।চাঁদপুর জেলা পরিষদের আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধকালীন চাঁদপুর জেলার কমান্ডার ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধকালীন চাঁদপুর জেলার ৪১৩ জন কমান্ডার ও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পঅর্পণ করেন অতিথিবৃন্দ। এরপর আমন্ত্রিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেওয়া হয়।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গণি পাটওয়ারী। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।
জেলা প্রশাসক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যানে অনেক কাজ করেছেন। তার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ভাবেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি বীর নিবাস করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস করা হবে।
সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা সর্বোচ্চ সম্মান করি। আপনাদের যে কোন প্রয়োজনে আমাদের কাছে আসবেন। আমরা আপনাদের সাথে যে কোন পরিস্তিতিতে কথা বলতে প্রস্তুত আছি। আমার বাবা এবং নানা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় আমাদের গ্রামে যে একটি বাড়িতে আগুণ দেয়া হয়েছে, সেটি আমাদের বাড়ি। আমার বাবাও এখন আপনাদের মত বয়সের ভানে নূয্য। আগামী বছরে হয়তো আমরা অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে ফেলবো। বাঙালী জাতির বীর সন্তানদের চোখে দেখার যে সৌভাগ্য আমরা পেয়েছি, তা যখন তারা থাকবেন না, তখন বুঝতে পারবো।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গণি পাটওয়ারী বলেন, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। তিনি একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেটি বাস্তবায়ন করছেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রকে নসাৎ করে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আগামী দিনেও তিনি যেন দেশকে নেতৃত্বে দিতে পারেন সে জন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে রাস্ট্র ক্ষমতায় আনতে হবে।
অনুষ্ঠানে চাঁদপুরের সকল পর্যায়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবারের সদস্য, জেলা পরিষদের সকল সদস্য এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন অনন্দধ্বনী সংগীত শিক্ষায়তনের শিল্পীরা।
চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম, এনএসআইয়ের চাঁদপুর উপ-পরিচালক আরমান হোসেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন নাহান চৌধুরী, যুদ্ধকালিন কমান্ডার শাহাজান কবির বীর প্রতীক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শহিদুল আলম, আব্দুর রব, মিয়া মো. জাহাঙ্গীর, সাবু পাটওয়ারী, সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ, ডেপুটি কমান্ডার মহসিন পাঠান, চাঁদপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল কালাম চিশতী, মতলব উপজেলার কমান্ডার মো. মোহাম্মদ মোজাম্মেল, ফরিদগঞ্জ উপজেলার কমান্ডার মো. সহিদউল্লাহ তপাদার, কচুয়া উপজেলার ডেপুটি কমান্ডার জাবেদ মিয়া প্রমুখ।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!