বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও সংস্কার কার্যক্রমে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ইউনূসের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এর মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, মুখ্যসচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ।
আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। এর মধ্যে রাজনৈতিক সংস্কার, ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার দায়ীদের জবাবদিহিতা, বৈশ্বিক বাণিজ্যে সুরক্ষামূলক শুল্কনীতির প্রভাব এবং ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলন উল্লেখযোগ্য।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে, যা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য। তিনি বলেন, আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্বাচনের জন্য জাতিসংঘের সহায়তা প্রয়োজন। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও তাদের সহযোগীরা পাচারকৃত অর্থ দিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
অধ্যাপক ইউনূস আরও জানান, তারা ফেব্রুয়ারির নির্বাচন চায় না এবং কিছু আন্তর্জাতিক মহল তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
জবাবে মহাসচিব গুতেরেস বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার কর্মসূচিতে জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে জাতিসংঘ অব্যাহতভাবে কাজ করবে।
গত ১৪ মাসে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে গুতেরেস বলেন, “বাংলাদেশের এই কঠিন উত্তরণকালীন আপনার নেতৃত্ব আমি শ্রদ্ধা করি ও প্রশংসা করি।”
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সম্মেলন আয়োজনের জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের অগ্রাধিকারে রাখবে এবং শরণার্থী শিবিরে জরুরি মানবিক সহায়তার তহবিল সংগ্রহে ভূমিকা রাখবে।
এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের পাশে থেকে সংকট সমাধানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!