উপযোগিতা:
১. যে সকল লোকের চুল কালো ও পেশীতন্তু দৃঢ়, যারা দুর্বল, সোরা দোষ দুষ্ট, গায়ের চামড়া হলদে ও মলিন, যাদের শ্বাসযন্ত্র ও মুত্রযন্ত্র সংক্রান্ত পীড়া হবার প্রবণতা থাকে তাদের পক্ষে উপযোগী। (ডাঃ এলেন)
২. পুরাতন বাত, সন্ধি প্রদাহ এবং পক্ষাঘাতিক রোগে উপযোগী (ডাঃ বোরিক)।
কারণ:
বহুদিন স্থায়ী শোক দুঃখ, চাপা মনে কষ্ট বিরক্তি, নৈরাশ্য ও দুশ্চিন্তাজনিত মানসিক ও অন্যান্য উপসর্গ। নিদ্রাহীনতা ও রাত্রি জাগরণ, উদ্ভেদ লোপ হইয়া রোগ, আকষ্মিক উত্তেজনা, ভয়, আতঙ্ক, আশংকা বা উৎকণ্ঠা, দুঃসংবাদ, দুশ্চিন্তা, আবেগ থেকে অসুস্থতা, আনন্দের মন্দ ফল। মেরুদন্ডে, মস্তিষ্কে, মনে আঘাত লাগিবার পর পক্ষাঘাত। শীতকালের ঠান্ডা বাতাস লেগে বিভিন্ন রোগ যেমন- কাশি, স্বরভঙ্গ, মুখের একদিকের প্যারালাইসিস, সায়েটিকা, বাতের ব্যথা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
মানসিক লক্ষণ:
ভয়ের সহিত মানসিক উৎকন্ঠা এই ওষুধের একটি প্রবল লক্ষণ। বিনা কারনে বা সামান্য কারনে প্রাণ ভয়ে ব্যাকুল হইয়া উঠে মনে হয় কি জানি কি ঘটিবে। অজানিত ভয়ের আশংকায় ভীত চিত্ত। এই সকল মানসিক লক্ষণ রাতে বৃদ্ধি পায়। সন্ধ্যার প্রাক্কালে তাহার সকল কষ্টের বৃদ্ধি, তাই রাত আসার ভয়ে ভীত হয়, অনেক দিন ভুগিয়া ভুগিয়া উম্মত্ততার দিকে গেলে এই ওষুধ অনেক রোগীকে আরোগ্য করিয়াছে। রোগের বিষয় চিন্তা করিলে বৃদ্ধি, অন্যের দুঃখে অতিশয় সহানুভূতি প্রকাশ করে। কষ্টিকামের রোগী বড়ই বিষন্ন প্রকৃতির। কিছুতেই তাহার মনকে প্রফুল্ল করা যায়না। সংসার তাহার নিকট নৈরাশ্যজনক মনে হয়। ভবিষ্যতের অমঙ্গল চিন্তায় সর্বদাই উদ্বিগ্ন। সে মনে করে যে, তাহার ব্যাধি আরোগ্য হইবে না। তাহার মৃত্যুই হইবে। কষ্টিকামের রোগী অস্থির প্রকৃতির। বাচ্চারা প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় প্রথমে পুনরাবৃত্তি করে তারপর উত্তর দেয়।
দীর্ঘদিন রোগে ভুগতে থাকলে আস্তে আস্তে রোগীর মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে থাকে। ফলে রোগী বোকা, হাবাগোবা হয়ে যায়। সবকিছু ভুলতে থাকে, উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকে, ভয় ভয় ভাব চলে আসে এবং সে অন্যায় সহ্য করতে পারে না, প্রচন্ড রেগে যায়। অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। অন্যের দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে পারে না।
টেনশন বেশি, আপনজন বাড়ির বাহিরে থেকে ফিরতে দেরী হলে অত্যন্ত টেনশন করে, পায়চারি করে, বার বার ফোন করে, জানালায় গিয়ে বার বার দেখতে থাকে। অন্যায় মোটেও সহ্য করতে পারে না, অন্যায়ের প্রতিবার করা এদের অভ্যাস, সব ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করে। অত্যন্ত সহানুভূতিশীল, দয়ামায়া বোধ খুব বেশি, অন্যের দুঃখ কষ্টে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
ব্যক্তি ভিত্তিক লক্ষণ:
১. সব রোগ ডানদিকে বাড়ে, ডানদিকের বাত বা পক্ষাঘাতে ভালো কাজ করে। ব্রেইন স্ট্রোকের পর শরীরের ডানদিক সম্পূর্ণ পক্ষাঘাত হলেও এই ওষুধ ভালো কাজ করে।
নোট: ব্রেইন স্ট্রোকের পর শরীরের ডানদিক সম্পূর্ণ সুস্থ করেছি। ব্রেইন স্ট্রোকের ক্ষেত্রে যদি সুযোগ পাওয়া যায় তবে প্রথমে কয়েক ডোজ আর্নিকা ৩০ বা ২০০ দিতে হবে। এতে ব্রেইনে রক্তের জমাট বাধা বন্ধ হয়। তারপর যদি দেখা যায় যে রোগী ডানদিকের অঙ্গসমুহ নাড়াচাড়া করতে পারছে না তখন কষ্টিকাম দিতে হবে।
২. ব্রেইনের নার্ভাস সিস্টেমের উপর ভালো কাজ করে। স্পাইন্যাল কর্ড, কোমর ও থাই মাসল নার্ভের বাতের ব্যথার প্রধান ওষুধ। আস্তে আস্তে একটির পর একটি অঙ্গ প্যারালাইজড হয়ে যায়। বাতের ব্যথায় কোমর সামনের দিকে বেঁকে গেলে কষ্টিকাম এবং মেডোরিনামে সুফল পাওয়া যায়।
৩. সর্বাবস্থায় অত্যধিক দুর্বলতা অনুভব করে। যদি কোন তরুণ রোগ ভোগের পর অত্যধিক দুর্বলতা হতে রোগী মুক্ত না হতে পারে তবে কষ্টিকাম বা সোরিনাম- এ দুটি অতি উত্তম ওষুধ।
৪. রাতে অস্থিরতা তৎসহ সন্ধি ও অস্থি সমূহ ছিড়ে ফেলার ন্যায় বেদনা এবং মুুর্ছিত হয়ে পড়ার মত দুর্বলতা, দুবলতা বৃদ্ধি পেয়ে অবশেষে পক্ষাঘাতে পরিণত হয়, বিশেষ কোন অঙ্গের পক্ষাঘাত, যথা- স্বরযন্ত্র, গলাধিঃকরন, পেশীর, জিহ্বা, চক্ষুর পাতা, মুখ মূত্রাধার ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গের (ডাঃ বোরিক)। কোন একদিকের একটি হাত এবং পায়ের পক্ষাঘাত ইত্যাদি বিশেষ একটি অঙ্গের প্যারালাইসিসে এটি একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ।
৫. ব্যথার চরিত্রগত লক্ষণ হলে- আক্রান্ত স্থানে, টেনে ধরার মতো, টনটনে ( ফোঁড়া হলে যেমন ব্যথা হয়) এবং ঘা ঘা ভাব থাকে। আক্রান্ত স্থানে অসাড় ভাব থাকতে পারে। সব ব্যথায় গরম সেঁকে উপশম।
৬. পরবর্তী অত্যাশ্চর্য লক্ষণ পাওয়া যায় বন্ধনীগুলিতে, ওইগুলো ছোট হয়ে যায়। সাময়িক স্থায়ী সংকোচন উপস্থিত হয়। আক্রান্ত অঙ্গ আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। সময় সময় সমস্ত পেশীটি কঠিন ও ছোট হয়ে যায়। পেশী ও বন্ধনী সমূহের সংকোচন (ডাঃ কেন্ট)।
৭. বধিরতার উত্তম ওষুধ, সব সময় কানের মধ্যে বিভিন্ন রকম শব্দ হয়, রোগীর নিজের কথা নিজ কানে প্রতিধ্বনিত হয়। মাথা এপাশ-ওপাশ ফিরালে কানের ভিতর কট কট শব্দ করে।
৮. ডা. হেরিং বলেন- চোখের ছানি রোগে রোগী যখন ঝাপসা দেখে, সর্বদাই চোখে হাত দেয়, চোখ রগড়ায় এবং চোখ ভারবোধ হয়- তখন কষ্টিকাম কার্যকরী ওষুধ।
৯. টাটানো ছাল উঠার ন্যায় অনুভূতি গলা ও কন্ঠনালীতে, বক্ষে, সরলান্ত্রে. মলদ্বারে, মূত্রমার্গে এবং উদ্ভেদ জ্বালা সহকারে (ডাঃ ন্যাশ)।
১০. যে কোন বাত রোগ ও হাড়ের ক্ষয়ে খুব ভালো কাজ করে। সন্ধির চারদিকের পেশী ও বন্ধনী সমূহের সংকোচন এর সাথে থাকে বাত অবস্থা, কখনো কখনো স্ফীতিযুক্ত, সর্বদাই যন্ত্রনা থাকে, পরিশেষে সন্ধির আকুঞ্চন ও টানটান ভাব, সন্ধিগুলোর আড়ষ্টতা। সন্ধিগুলোর এই অবস্থা যখন চলতে থাকে তখন রোগী ক্রমশঃ অধিকতর দূর্বল হইতে থাকে। বিমর্ষ, নিরাশ, উদ্বেগপূর্ণ ও ভীত অবস্থার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। সর্বদা নৈরাশ্য বর্তমান থাকে। যেন তার উপর কিছু ঝুলছে, যেন কোন কিছু ঘটতে চলছে এইরূপ অনুভূতি থাকে। (ডাঃ কেন্ট)
১১. বাতজনিত পক্ষাঘাত হলে কিংবা বাতে পঙ্গু হয়ে পড়লে- ডা. ন্যাস বলেন- “আমি মেটিরিয়া মেডিকার সকল ওষুধ পরিত্যাগ করে কেবল সালফার, কষ্টিকাম ও রাস-টক্স এ তিনটি ওষুধ নিয়ে থাকতে পারি”।
১২. কষ্টিকামের রোগী ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাসে থাকলে বৃদ্ধিযুক্ত হয়। সে বাড়ী অথবা যানবাহনে চড়ে উন্মুক্ত শুষ্ক শীতল বাতাসে বেড়াইলে মুখের যে পাশে বাতাস লাগে সেই পাশে পক্ষাঘাত গ্রস্থ হয়।
১৩. পরিষ্কার আবহাওয়ায় অসুস্থ বোধ করে, ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় ভাল বোধ করে।
১৪. যৌবনোদগম বয়সে ভয় হইতে ঠান্ডা লাগায় বা আবহাওয়ার বেশী পরিবর্তন কালে অনাবৃত থাকায় মৃগি রোগ। (ডাঃ কেন্ট)
১৫. আক্ষেপিক লক্ষণ, খাল ধরা, কখনো এখানে কখনো সেখানে যদি সে ভয় পায়, নিশ্চয়ই তার কোন না কোন রকম আক্ষেপ দেখা দিবে। হিষ্টিরিয়াগ্রস্থা স্ত্রীলোকেরা ভয় হইতে মুর্ছাগ্রস্থ হবে। রাতে তান্ডব রোগ। জিহবা ও মুখের এক পাশ্বের তান্ডবরোগ।
১৬. নিদ্রাকালে অস্থিরতা, এর অস্থিরতা খুব বেশী বিশেষতঃ রাতে শয্যা গ্রহণ করে কিছুতেই স্থির থাকিতে পারেনা। ক্রমাগত ছটপট, এপাশ ওপাশ করিতে থাকে। নিদ্রাকালে পা নাচায়, বিরল লক্ষণ।
১৭. শীতকাতর, ডান দিকে রোগাক্রমণ, আগুনে পোড়া মাংস; ঝাল-টক প্রিয় ও মিষ্টি অপ্রিয়, সংক্ষেপে কষ্টিকামের সারকথা। আর গরম কাতর হলে Lac Can
১৮. গভীর সহানুভূতি সম্পন্ন, পর দুঃখ কাতর ও ন্যায় বিচারে কঠোর মনোভাব, অমঙ্গল আশংকা।
১৯. কষ্টিকাম অত্যন্ত শীতকাতর, ঠান্ডা সহ্য করিতে পারে না, ঠান্ডায় বৃদ্ধি, কিন্তু কাশি ঠান্ডা পানি পান করিলে আরাম। ব্যতিক্রম লক্ষণ।
২০. কষ্টিকামের রোগী অনেক সময় মুখ “হা” করার পর আর মুখ বন্ধ করতে পারে না।
২১. দাঁতের ব্যথায় মুখে ঠান্ডা পানি রাখলে আরাম। তবে ব্যথা পুনরায় ফিরে আসলে তখন গরম পানিতে আরাম।
২২. পিপাসার সময় জল পানে অনিচ্ছা।
২৩. মনের উপর ক্রিয়ার অতিশয় অবসাদ ভাব প্রকাশ পায় এবং উহার সহিত স্নায়ুমন্ডলের সাধারণ ক্রিয়ার সংযোগ থাকে। বিষাদ ভাব, বিমর্ষতা, আশা শূন্যতা, প্রত্যেক বিষয়ের মন্দ দিকটা দেখে, এই বিষাদ ভাব প্রায়ই শোক, দুশ্চিন্তা হতে আসে এবং দীর্ঘকাল স্থায়ী দুঃখের কারণ হতে উৎপন্ন হয়। (ডাঃ ন্যাশ)
২৪. কোন কারণে বিরক্ত হলে কথায় তোতলামি আসে (মার্কসলের রোগী রেগে গেলে কথা আটকে যায়)। সন্ধ্যার দিকে এদের রাগ, ভয় এবং চিন্তা বেড়ে যায়।
২৫. টাটানি বা নুন ছাল উঠার ন্যায় অনুভূতি কষ্টিকামের সামগ্রিক লক্ষনের পর্যায়ভূক্ত।
২৬. চর্মরোগ; মলদ্বারে চুলকানি, যেকোন চর্মরোগে ঠান্ডা পানিতে উপশম।
২৭. কষ্টিকামের যত প্রকার কষ্ট একমাত্র মলদ্বারের পীড়াতেই (মলদ্বার ফাটা, মলদ্বারের অর্শ, মলদ্বারের বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রণা ইত্যাদি) রোগী অনুভব করতে পারে। মলদ্বারের যন্ত্রণায় কষ্টিকাম একটি উল্লেখযোগ্য ওষুধ। রোগীর মলদ্বারের বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রণায় সর্বপ্রথম কষ্টিকামকেই স্মরণ করতে হয়।
২৮. শরীরের যেকোন জায়গায় আঁচিল হতে পারে। তবে কষ্টিকামের আঁচিল শরীরের উপরের অংশে বিশেষ করে ঘাড়ে, মুখমন্ডলে, নাকে, চোখের পাতায়, কানের গোড়ায়, হাত-পা ইত্যাদি জায়গায় বেশি হয়। কষ্টিকামের আঁচিল ছোট, চ্যাপ্টা কিংবা সুচালো।
২৯. কাপড় টাইট করে পড়তে পারে না।
৩০. সব সময় শরীরের বিভিন্ন অংশে খালি খালি ভাব বা শূণ্যতাবোধ থাকে। মাথার মধ্যে ফাঁকা ফাঁকা মনে হয় কিন্তু গরম সেঁকে তা থাকে না। পায়ের তলায় পিপড়ে হাঁটার অনুভূতি হয়। শরীরের অভ্যন্তরে খিঁচুনী অনুভূত হয়।
৩১. লক্ষণের উপর ভিত্তি করে প্রদত্ত সুনির্বাচিত ওষুধে পুরোপুরি আরোগ্য না হয়ে একই অবস্থায় চলতে থাকলে সেক্ষেত্রে একবার কষ্টিকাম দেয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।
বিশেষ লক্ষণ:
১. ভয়ানক ক্ষুধা কিন্তু খেতে বসলে আর খেতে পারেনা। টক, রুটি, কফি, চা, ফ্রেশ গোশত, চর্বিজাতীয় খাদ্য, ময়দার তৈরি খাবার খেলে কষ্ট বাড়ে। কষানো গোশত, ঝলসানো খাবার যেমন বারবিকিউ, গ্রিল, শিক কাবাব ইত্যাদি, ঝাল, ঠান্ডা পানীয়, অ্যালকোহল, টাটকা দ্রব্য, লবন বা লবণাক্ত দ্রব্য ইত্যাদি খেতে পছন্দ করে। অপছন্দ: খোলা বাতাস, মিষ্টি, সহবাস।
২. সাবান, চুন, সোডা খেয়ে গালে ঘা হলে কষ্টিকাম ভালো কাজ করে।
৩. সারা মাথা জুড়ে পুরা চামড়া একজিমা (মেজের)।
৪. গ্যাসের আলো দেখলে মাথা ঘোরে। খোলা বাতাস থেকে এসে বাসায় ঢুকলে মাথা ব্যথা আরম্ভ হয়। উপর থেকে নামতে পা কাপে।
৫. পোড়া ঘা, ক্ষত পুনঃ পুনঃ নতুন ভাবে প্রকাশ পায়।
৬. শিশুরা যথাসময়ে হাঁটতে শেখেনা বা হাঁটতে গেলে ক্রমান্বয়ে পড়ে যায়।
৭. কাঁচা সর্দি পরিস্কার আবহাওয়ায় বৃদ্ধি পায়।
৮. অসাড়ে মূত্র নির্গমন; হাঁটতে, কাশতে, নাক ঝাঁড়তে অসাড়ে মূত্রপাত।
৯. বসা অপেক্ষা দাঁড়িয়ে মলত্যাগ সহজ হয়। অর্শের জন্য মলত্যাগ বাধাপ্রাপ্ত হয়। অর্শের যন্ত্রনা মনে পড়িলে বৃদ্ধি। বিরল লক্ষণ।
১০. ঋতুস্রাব কেবলমাত্র দিনের বেলায় হয়। শুইলে বন্ধ থাকে। ঋতুকালে মুর্চ্ছা, কম্পন এবং নর্তন রোগ, লিউকোরিয়া রাতে বৃদ্ধি পায়। মাসিকের ব্যথা চেপে ধরলে আরাম। কলোসিন্থের লক্ষণে কলোসিন্থে উপকার না হলে কষ্টিকাম দিতে হবে।
১১. মেরুদন্ড বা মাথায় আঘাত লাগার পর পক্ষাঘাত, মনের মধ্যে আঘার লাগার পর পক্ষাঘাত। কষ্টিকাম ঘাড়ের এবং মেরুদন্ডের নিম্নাংশের ব্যথায় বেশি কাজ করে।
১২. শুষ্ক কাশি, তৎসহ কুঁচকি স্থানে বেদনা বিশেষত বা কুঁচকিতে ও অনৈচ্ছিক মূত্র নিঃসরণ, বায়ুপথে টাটানি, নুনছাল উঠার ন্যায়, শ্লেষ্মা তুলে ফেলতে পারেনা। ঠান্ডা পানি পানে আরাম, সন্ধ্যায় বৃদ্ধি।
১৩. ডিপথেরিয়ার পর স্বরযন্ত্রের পক্ষাঘাত, সন্নাস রোগের পর একাঙ্গীন পক্ষাঘাত জনিত বাকরোধ।
১৪. স্বরভঙ্গ সকালে বাড়ে, সন্ধ্যায় বাড়ে এবং শীতকালে বাড়ে। শীতকালে ঠান্ডা লেগে স্বরভঙ্গ অ্যাকোনাইট বিফলে কষ্টিকাম দিলে সুফল পাওয়া যায়। আর গ্রীষ্মকালে অ্যাকোনাইট বিফলে ল্যাকেসিস দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
১৫. শোকে বা দুঃখে স্তনের দুধ শুকাইয়া যায়।
নোট: কষ্টিকাম ওষুধ সালফারের সাথে এত ঘনিষ্ট সম্বন্ধে আবদ্ধ যে কষ্টিকাম ওষুধে রোগী আরোগ্য না হলে অবশ্যই সালফার প্রয়োগ করতে হবে, কারণ সালফার প্রয়োগ ছাড়া বুঝা যাবে না যে, কষ্টিকাম কার্যকরী হয়নি।
বৃদ্ধি:
পরিষ্কার সুন্দর আবহাওয়ায়, বাইরের বাতাস হতে গরম ঘরে প্রবেশ করলে, ঠান্ডা লাগাইলে, ভিজলে বা স্নান করলে। সব কষ্ট ঠান্ডায় ও শীতকালে বাড়ে। বাতের ব্যথা ঠান্ডায় এবং রাতে, অমাবস্যায় এবং পূর্ণিমায় বাড়ে।
উপশম:
গরম বাতাসে, আদ্র স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় সবচেয়ে ভালো থাকে। ঠান্ডা পানি পানে উদরাময় এবং কাশির উপশম।
মর্মবানী:
কষ্টিকামের রোগীগুলি প্রায়ই একটু পীতাভ হয়, অর্থাৎ যকৃতের দোষযুক্ত হয় কিন্তু কাল্পনিক বিপদের আশংকা, অন্ধকার ভীতি, পরবাসে কুন্ঠাবোধ, মিষ্টি দ্রব্যে অনিচ্ছা কষ্টিকামের মর্মবানী।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!