চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে গেস্টহাউসের কক্ষে কক্ষে তল্লাশি চালানো এবং ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় আলোচিত হান্নান রহিম তালুকদারকে চাঁদাবাজির মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৭ জুন) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহিম খলিল এ আদেশ দেন।
চান্দগাঁও থানা-পুলিশ গতকাল সোমবার রাতে নগরের কোতোয়ালি মোড় এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন জানান, হান্নান রহিমের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় দায়ের হওয়া চাঁদাবাজির মামলায় আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠান। তাঁর জামিন শুনানি আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।
ঘটনার পেছনের কাহিনি
গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে গেস্টহাউসে তল্লাশি চালানোর একটি ভিডিও আপলোড করেন হান্নান। ১৫ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকার একটি গেস্টহাউসে ঢুকে কক্ষগুলোতে গিয়ে ক্যামেরা নিয়ে অতিথিদের পরিচয় জানতে চান এবং কিছু কক্ষ থেকে অতিথিদের বের করে এনে জেরা করেন।
এই ভিডিও প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন—সাংবাদিক পরিচয়ে কেউ কক্ষে কক্ষে গিয়ে এভাবে ব্যক্তিগত জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন কি না? পুলিশও স্পষ্ট করে জানায়, এ ধরনের তল্লাশির কোনো এখতিয়ার সাংবাদিকের নেই, এবং বিষয়টি আইনগত দৃষ্টিতে অপরাধ।
হান্নান রহিম কে?
হান্নান নিজেকে দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ-এর সম্পাদক এবং সিএসটিভি২৪-এর চেয়ারম্যান দাবি করলেও, এসব গণমাধ্যমের নিবন্ধন সংক্রান্ত কোনো সরকারি প্রমাণ মেলেনি। ফেসবুক প্রোফাইলে নিজেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য বললেও প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, তিনি তাদের সদস্য নন।
হান্নান রহিমের বিরুদ্ধে অতীতেও একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৬ সালের দ্রুত বিচার আইনের অধীনে একটি মামলা, ২০১৭ সালের হত্যাচেষ্টা ও চুরির মামলা, এবং সাংবাদিক এফ এম মিজানুর রহমানকে হুমকির অভিযোগে একটি জিডি।
এছাড়া ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। নিজেকে দক্ষিণ জেলা যুবদলের পদপ্রার্থী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!