সংবাদের পুনর্লিখন
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে আজ বৃহস্পতিবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবিগুলো মূলত দীর্ঘদিনের অবহেলা ও কষ্টেরই প্রতিফলন।
শুধু সাম্প্রতিক কোনো ক্ষোভ নয়, এই আন্দোলনের পেছনে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা কষ্ট আর অব্যবস্থাপনার বাস্তবতা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিদিন সকাল ৬টায় বাস ধরতে হয়। ক্লাস শেষ হয় দুপুরে, কিন্তু তখন শরীর আর মন—দুটোই ভেঙে পড়ে ক্লান্তিতে। শিক্ষার্থীদের এই অবসাদ স্পষ্ট চোখেমুখে। কারণ, এখনো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই পূর্ণাঙ্গ আবাসন ব্যবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, “বিশ্বাস করুন, ক্লাস নিতে মন চায় না। শিক্ষার্থীদের কষ্ট দেখে কষ্ট হয়। শুধু ক্লাসে ঠাসাঠাসি নয়, ক্যাম্পাসেই জায়গা নেই।”
পুরান ঢাকার ছোট্ট ১১ একরের ক্যাম্পাসে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী পড়ছেন। নেই খেলার মাঠ, নেই মানসম্মত একাডেমিক ভবন। ছাত্রছাত্রীরা খেলাধুলা করে ধুলাবালির মাঠে, আর ক্লাস করে পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে।
এক বিদেশি পর্যবেক্ষক পর্যন্ত মন্তব্য করেছেন, "জগন্নাথ বাংলাদেশের সবচেয়ে নোংরা ক্যাম্পাস!"—বিশ্ববিদ্যালয়ের বেহাল টয়লেট ও ক্লাসরুম দেখে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এত সংকটের মধ্যেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। আগে যেখানে ৬০ জনে ক্লাস হতো, এখন সেখানে গাদাগাদি করে ৮৫ জন।
এই বাস্তবতায় শিক্ষার্থীরা তিনটি মূল দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে:
৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি কার্যকর করা
২০২৫–২৬ অর্থবছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট কাটছাঁট না করা
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত একনেক সভায় অনুমোদন ও বাস্তবায়ন
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মনে করেন, হয়তো একসঙ্গে সব দাবি মানা সম্ভব নয়, কিন্তু অন্তত কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি দরকার। যেমন, আবাসন বৃত্তি আংশিকভাবে চালু করা বা বাজেট নিয়ে বিশেষ বিবেচনা করা, এসব পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের আস্থায় আনতে পারে।
একইসঙ্গে, শিক্ষকরা অনুরোধ জানিয়েছেন, আন্দোলন যেন নিরাপদ থেকে হয় এবং কাকরাইলের মতো রাস্তাঘাট যেন অবরুদ্ধ না হয়।
সবচেয়ে বড় কথা, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের দেখতে চাই শ্রেণিকক্ষে—not রাজপথে পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হয়ে। সময় এসেছে আন্তরিক সমাধানের।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!