হুমায়ুন কবির,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বুডিপুকুর নামে একটি প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম জুঁই আক্তারের।
পরিবারে উপার্জন করার তেমন কেউ নেই, বাবা মানুষের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে ভ্যান চালি কোনমতে সংসার চালায়। তবুও হাল না ছেড়ে দিয়ে জুঁই লড়ে গেছে নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আর সেই লড়াইয়ে ফলও হিসেবে এবার-২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ- পেয়ে সুনামের সাথে কৃতকার্য হয়েছে।তবে তার সাফল্যের পথটা সহজ ছিল না।
চরম দারিদ্র্য, প্রতিকুল পরিবেশ আর সীমাহীন অভাবের ভিতর দিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। এই বাস্তবতায় সমাজসেবামূলক সংগঠন ‘বসুন্ধরা শুভ সংঘ’, রাণীশংকৈল উপজেলা শাখা, এগিয়ে আসে তার পাশে। এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬ টায় রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে শুভ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে জুঁইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়- শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পোশাক, এক মাসের খাদ্যসামগ্রী (চাল, ডাল, তেলসহ)স্কুলে যাতায়াতের জন্য একটি নতুন বাইসাইকেল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও শুভ সংঘ উপজেলা শাখার সভাপতি মহাদেব বসাক।স্বাগত বক্তব্য দেন সাংবাদিক ও কালের কণ্ঠ রাণীশংকৈল প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম শিল্পী।
রাণীশংকৈল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক কালবেলা প্রতিনিধি হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন ও খলিলুর রহমান বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, চোপড়া-দোশিয়া (সিডি) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন,গাজিরহাট ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক কবিরুল ইসলাম কবির, উপ সহকারী কৃষি অফিসার আবুল কালাম, প্রভাষক জহিরুল ইসলাম জহির, প্রেসক্লাবের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম, নেক্সাস টিভির প্রতিনিধি সাংবাদিক নাজমুল হোসেন, দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার প্রতিনিধি খালেদ মাহামুদসহ জুইয়ের বাবা-মা ও নানী,স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিক এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
পরে জুঁইয়ের হাতে বাইসাইকেলটি উপহার হিসেবে তুলে দেন মীরা মেডিকেল ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী সাংবাদিক মাসুদ রানা।
সহায়তা পেয়ে আবেগাপ্লুত জুঁই জানায়,“বসুন্ধরা শুভ সংঘের এই সহযোগিতা শুধু বাইসাইকেল বা খাদ্যসামগ্রী নয়, এটা আমার শিক্ষা জীবনের চলার পথে চরম সাহস যোগাবে। আমি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই। ভবিষ্যতে একজন ডাক্তার হয়ে সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।”
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, একজন শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ানো মানে কেবল একজনকে এগিয়ে দেওয়া নয়, বরং একটি পরিবার এবং সামগ্রিকভাবে সমাজকে আলোর পথে নিয়ে যাওয়া।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!