বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর গতকাল রাতে(৩ সেপ্টেম্বর) হামলার ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ বিকাল ৫.৩০টায় সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী রাফিন কায়সার বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলাকা পরিবহনে ঢাকা যাওয়ার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে। কিন্তু বাস কর্তৃপক্ষ তাকে কোনো অথরিটির কাছে না পৌঁছে দিয়ে বা তার পরিবারের কারো সাথে যোগাযোগ না করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। এই ঘটনা শুনে আমরা নতুল্লাবাদ গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই এবং আইনের আশ্রয় নেই। পরে বন্দর থানার ওসির মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের সমঝোতায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ৪০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে বলে মুসলেকা দেওয়া হয়। তখন তারা ৩২ হাজার টাকা দেয়। গতকাল রাতে বাকি আট হাজার টাকা নিতে ফোন করে বটতলায় ডাকে। সেখানে যাওয়ার পরই আমাদের উপর বিএম কলেজের প্রধান সমন্বয়ক দাবি করা মোস্তাফিজুর রহমান, রাজু সহ কয়েকজন আমাদের উপর নৃশংসভাবে হামলা করে। এক পর্যায়ে আমরা প্রাণ ভিক্ষা চাই।
আমাদেরকে মেরে ,আটকে রেখে চাঁদাবাজ ট্যাগ দিয়ে ভিডিও করে ,সেই ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ করে। এই ভিডিও পাবলিশ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের উদ্ধার করতে এবং মীমাংসার উদ্দেশ্যে একটি বাস নিয়ে আসেন। কিন্তু বিএম কলেজের শিক্ষার্থী পরিচয়ধারী সন্ত্রাসীরা আমাদের বাস ভাঙচুর করে এতে বাসের ভিতর থাকা ৩০-৩৫জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শত শিক্ষার্থী বিএম কলেজের সামনে যায় , তখন কলেজের ভিতর থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ইট পাটকেল ছুড়ে মারে ও আক্রমণ করে। তখন দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়। বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা সশস্ত্র এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা খালি হাতে থাকায় তারা ছাত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এই ঘটনায় আমাদের প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে আমাদের উদ্ধার করে।কিন্তু বিএম কলেজে তেমন কেউ আহত হয়নি। আমাদের শিক্ষার্থীরা শেরে বাংলা হাসপাতালে ভর্তি আছে,আমরাও শেরে বাংলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তারা আরো বলেন,আমরা এই হামলার তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু ও সর্বোচ্চ বিচার চাই।
উল্লেখ্য, গত পরশুদিন রাত ১১ টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এক ছাত্রীর বাসায় বিএম কলেজের সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল আদালতে মামলা চলমানাধীন জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সমাধান করতে যায়। বাসায় পুরুষ মানুষ না থাকায় তারা দিনের বেলায় যেতে বললে তারা রাজি হয় না এবং গালাগালি করে ও গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। তখন ববি ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা চায় । বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে গেলে দুই পক্ষের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে ।
ববি শিক্ষার্থীদের মতে, সেই ঘটনার রেস ধরেই ববি শিক্ষার্থীদের উপর বিএম কলেজের কিছু সন্ত্রাসীরা এই আক্রমণ করে। তারা আরো বলেন, এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে বি এম কলেজের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়িত নয়। শিক্ষার্থী পরিচয়ধারী কিছু সন্ত্রাসীরা এই হামলা করেছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!