ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা আবারও সামনে নিয়ে এসেছে একটি দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সমস্যাকে। রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের সঙ্গে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আলোচনা শেষে এ ঘটনা ঘটে। সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ তুলে সন্ধ্যায় সায়েন্স ল্যাব মোড়ে সড়ক অবরোধ করে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সড়ক বন্ধ থাকে। পরে রাত ১১টার দিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দিকে অগ্রসর হলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
সংঘর্ষের পেছনের কারণ ও অবহেলা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, দুই পক্ষ লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে একে অপরের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। উচ্চশিক্ষার পরিবেশে এমন আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক। কয়েক ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ ও সংঘর্ষের মধ্যেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর ভূমিকা দেখা যায়নি।
২০১৭ সালে ঢাকার সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হলেও, শুরু থেকেই নানা সংকট তৈরি হয়। পরীক্ষার তারিখ, ফলাফল প্রকাশসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সাত কলেজের প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থীকে বারবার রাস্তায় আন্দোলনে নামতে হয়েছে। এর ফলে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন সাধারণ নগরবাসীও।
বর্তমান পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের দাবি
সোমবার দুপুরে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন। এর জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, সাত কলেজ আর ঢাবির অধীনে থাকবে না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে সাত কলেজে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে না।
সমাধানে প্রয়োজন গতিশীল উদ্যোগ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সাত কলেজের সংকট সমাধানে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। শিক্ষার্থীদেরও বুঝতে হবে যে এটি আট বছরের পুঞ্জীভূত সমস্যা। হঠাৎ তাড়াহুড়া করে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। যৌক্তিক সমাধানই সংকট নিরসনের একমাত্র পথ।
সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি শিক্ষার্থীদের এই সমস্যার একটি স্থায়ী ও গ্রহণযোগ্য সমাধানের আহ্বান রইল।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!