শীতকালকে বলা হয় ইবাদতের বসন্তকাল, যেখানে মুমিনরা আল্লাহর কাছে নিকট হতে আরও বেশি সাওয়াব অর্জন করতে পারেন। শীতের দিনে প্রকৃতি তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, কুয়াশা আর শিশিরে পরিবেশ হয়ে ওঠে প্রশান্তিদায়ক। এই সময়টা আল্লাহর নেয়ামত ও কৃতজ্ঞতার আদায়ের সুবর্ণ সুযোগ। তবে শীতকালে ইবাদত করার কিছু বিশেষ আমল রয়েছে, যেগুলো মুমিনদের জীবনকে আরও পূর্ণতা দেয়।
এখানে শীতকালে মুমিনদের জন্য পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আমল তুলে ধরা হলো:
১. বেশি বেশি রোজা রাখা
শীতকালে দিন ছোট থাকে, যা রোজা রাখাকে সহজতর করে। শরীরের ওপর কোনো অতিরিক্ত চাপ না আসায় এই সময়ে বেশি রোজা রাখা যায়। হজরত আমের ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শীতকালের গনিমত হচ্ছে এই সময় রোজা রাখা।” (তিরমিজি: ৭৯৫) তাই শীতকালে রোজা রাখার মাধ্যমে অনেক সওয়াব অর্জন করা যায়।
২. নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা
শীতকালে রাত দীর্ঘ হওয়ায় তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য সময় পাওয়া যায়। অতিরিক্ত ঘুমের পর শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সহজ হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা ঈমানদারদের সম্পর্কে বলেছেন, “তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের রবকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।” (সুরা সাজদাহ: ১৬) এই নামাজের মাধ্যমে মুমিনরা আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়তে পারেন।
৩. অসহায়দের শীতবস্ত্র দান করা
শীতকালে অসহায় মানুষগুলো বস্ত্রের অভাবে কষ্টে থাকে। এ সময় তাদের পাশে দাঁড়ানো একটি বড় ইবাদত। ইসলামে দান করা বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। নবীজি (সা.) বলেছেন, “যে মুসলমান অন্য কোনো মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বস্ত্র দান করবে, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে সবুজ রঙের পোশাক পরাবেন।” (আবু দাউদ) এছাড়া, খাদ্য ও পানির দানও জান্নাতে বিশেষ পুরস্কারের অধিকারী করবে।
শীতকালের এই সময়টা যদি আমরা উপযুক্তভাবে কাজে লাগাই, তাহলে আমাদের ঈমান আরও দৃঢ় হবে এবং আল্লাহর রহমত ও সন্তুষ্টি অর্জন করা সহজ হবে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!