প্রতিটি মানুষের পরিচয়ের অন্যতম মাধ্যম তার নাম। তাই সন্তানের জন্য অর্থবোধক, সুন্দর এবং প্রভাবশালী নাম রাখা প্রতিটি অভিভাবকের দায়িত্ব। একটি সুন্দর নাম শুধু পরিচয়ের জন্যই নয়, এটি সন্তানের মানসিকতা, চরিত্র এবং জীবনের ওপর গভীর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
নাম রাখার ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলামে নাম রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "কিয়ামতের দিন মানুষকে তাদের এবং তাদের পিতার নাম নিয়ে ডাকা হবে।" (আবু দাউদ ৪৯৪৮) তাই সন্তানের জন্য সুন্দর ও অর্থবোধক নাম রাখা কেবল দুনিয়াবি পরিচিতির জন্য নয়, বরং আখিরাতেরও পরিচয়।
নেতিবাচক নাম পরিবর্তনের উদাহরণ
রাসূলুল্লাহ (সা.) সবসময় সুন্দর ও ইতিবাচক অর্থবোধক নাম পছন্দ করতেন। খারাপ অর্থবোধক নাম তিনি পরিবর্তন করে সুন্দর নাম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
- হযরত ওমর (রা.)-এর মেয়ের নাম ছিল ‘আছিয়া’ (অর্থ: অবাধ্য)। নবীজী তার নাম পরিবর্তন করে ‘জামিলা’ (অর্থ: সুন্দর) রাখেন। (মুসলিম ২১৩৯)
- হযরত সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিবের দাদা ‘হাযান’ (অর্থ: শক্ত জমিন) নাম পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে ‘সাহল’ (অর্থ: নরম জমিন) রাখতে বলেন। কিন্তু তা পরিবর্তন না করায় তাদের বংশে রুক্ষতার প্রভাব থেকে যায়। (বুখারি ৫৮৬৪)
সুন্দর নামের গুরুত্ব ও প্রভাব
নামের অর্থ মানুষের মানসিকতা, চিন্তা-চেতনা এবং আচরণে প্রভাব ফেলে। নেতিবাচক অর্থবোধক নাম শিশুর ব্যক্তিত্বের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এ কারণেই ইসলামে অর্থবোধক নাম রাখার নির্দেশনা রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম হলো আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান।" (সুনানে আবু দাউদ ৪৯৫০)
নাম রাখার সময় যা বিবেচনা করবেন
- নামের অর্থ যেন ইতিবাচক হয়।
- অহংকার বা ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে এমন নাম পরিহার করা উচিত।
- ইসলামের গুণাবলি বা নবীগণের নাম অনুসরণ করে নাম রাখা উত্তম।
অর্থবোধক নাম সন্তানের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে
সুন্দর ও অর্থবোধক নাম কেবল শিশুর দুনিয়াবি পরিচিতি নয়, এটি তার আত্মবিশ্বাস, মানসিকতা এবং চরিত্র গঠনে সহায়ক হয়। ইসলামের শিক্ষানুযায়ী অভিভাবকদের উচিত, সন্তানের নাম রাখার সময় হাদীসের নির্দেশনা অনুসরণ করা।
আপনার সন্তানের নাম হতে পারে তার জীবনের পথপ্রদর্শক। তাই নাম রাখার ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব দিন এবং ইসলামের আদর্শ অনুসরণ করুন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!