ইসলামে দোয়া হলো এক স্বতন্ত্র ইবাদত, যা আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও নির্ভরতার প্রতীক। এটি ইবাদতের মূল উপাদান হিসেবেও বিবেচিত হয়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দোয়ার গুরুত্ব শিখিয়েছেন।
বিশেষত, যখন কেউ প্রশংসা করে, তখন একটি বিশেষ দোয়া পড়তে বলা হয়েছে:
اللَّهُمّ لاَ تُؤَاخِذْنِي بِمَا يَقُولُونَ ، وَاغْفِرْ لِي مَا لاَ يَعْلَمُونَ وَاجْعَلْنِي خَيْرًا مِمَّا يَظُنُّونَ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা লা তু’আ-খিজনি বিমা ইয়াকুলুনা, ওয়াগফিরলি মা লা ইয়ালামুনা, ওয়াজআলনি খাইরান মিম্মা ইয়াজুন্নুন।
অর্থ:
হে আল্লাহ, তাদের কথার জন্য আমাকে পাকড়াও করো না, তারা যা জানে না, সে বিষয়ে আমাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তাদের ধারণার চেয়ে উত্তম বানিয়ে দাও।
দোয়া কবুল হওয়ার শর্ত ও গুরুত্ব
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তা কবুল হয়, তবে শর্ত হলো ধৈর্য ও বিশ্বাস রাখা।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন,
"তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে, যদি সে তাড়াহুড়া না করে। যদি কেউ বলে, ‘আমি দোয়া করলাম, কিন্তু কবুল হলো না’, তবে সেটি দোয়া কবুলের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।" (বুখারি ৬৩৪০)
অন্য এক হাদিসে হজরত জাবির (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন,
"কোনো ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে, আল্লাহ তাআলা হয় তাকে তা দান করেন, নয়তো কোনো অমঙ্গল দূর করেন, যতক্ষণ না সে কোনো গুনাহের কাজ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে।" (তিরমিজি)
দোয়ার মাধ্যমে তাকদির বদলায়
দোয়ার মাধ্যমে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে। হজরত সালমান (রা.) বর্ণনা করেন,
"দোয়া ছাড়া কিছুই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া কিছুই আয়ু বৃদ্ধি করতে পারে না।" (তিরমিজি ২১৩৯)
এছাড়াও, মহানবী (সা.) বলেছেন,
"যদি কেউ চায় যে, বিপদের সময় তার দোয়া কবুল হোক, তাহলে সে যেন সুখের দিনগুলোতে বেশি বেশি দোয়া করে।" (তিরমিজি ৩৩৮২)
উপসংহার
দোয়া হলো বিশ্বাসীর প্রধান অস্ত্র। এটি শুধু চাওয়া নয়, বরং আত্মার প্রশান্তি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায়। তাই প্রতিটি সুখ ও দুঃখের মুহূর্তে আল্লাহর দরবারে দোয়া করা উচিত, কারণ দোয়ার মাধ্যমেই পরিবর্তন আসে এবং কল্যাণ লাভ হয়।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!