আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা মানুষকে এই দুনিয়ায় শুধু পাঠিয়েই দায়িত্ব শেষ করেননি—বরং আকাশ ও জমিনের যাবতীয় কিছুই মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন। সূর্য, চাঁদ, বাতাস, বৃষ্টি, পশুপাখি, উদ্ভিদ, এমনকি মানুষের নিজের জ্ঞান-বিবেক—সবই আল্লাহর দেওয়া অফুরন্ত নিয়ামত।
তবুও আশ্চর্যের বিষয় হলো, অনেক মানুষ এই নিয়ামতের মূল্য না জেনে অকৃতজ্ঞ থাকে। শুধু অকৃতজ্ঞতাই নয়, অনেকে তো আল্লাহর অস্তিত্ব বা তাঁর নিয়ম নিয়ে এমন সব বিতর্কে লিপ্ত হয়, যার পেছনে নেই কোনো সঠিক জ্ঞান, পথনির্দেশনা বা আসমানী কিতাবের আলো।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন—
"তোমরা কি দেখো না? আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছুই তোমাদের জন্য নিয়োজিত করেছেন এবং তোমাদের ওপর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যভাবে তাঁর নিয়ামত বর্ষণ করেছেন। তবুও কিছু মানুষ আছে যারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হয়—অথচ তাদের না আছে কোনো জ্ঞান, না সঠিক পথ, না দীপ্তিমান কোনো কিতাব!"
(সূরা লুকমান, আয়াত: ২০)
এই আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন—মানুষের প্রয়োজন পূরণে তিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতিটি উপাদানকে নিযুক্ত করেছেন। রিজিক, স্বাস্থ্য, পরিবার, মানসিক শক্তি—সবই আল্লাহর দান। এর স্বীকৃতি দিয়ে কৃতজ্ঞ থাকা একজন প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
"যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞ নয়।"
(তিরমিজি: ১৯৫৪)
এই হাদিস আমাদের শেখায়—মানবিক কৃতজ্ঞতাও ঈমানের অংশ। কারণ সব নিয়ামতের মূল উৎস আল্লাহই। অন্য একটি হাদিসে রাসুল সা. বলেন, “সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সেই, যে বিতর্কপ্রিয়।” (আবু দাউদ: ৪৮৫৭)
যারা জ্ঞান ছাড়া আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হয়, তারা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। আর যারা কৃতজ্ঞতার পথ বেছে নেয়, আল্লাহ তাদের জন্য হেদায়াত ও শান্তির পথ সহজ করে দেন।
অতএব, আমাদের দায়িত্ব হলো—আল্লাহর দেওয়া অফুরন্ত নিয়ামত চিনে, স্বীকার করে, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। একইসঙ্গে হেদায়াতের আলো অনুসরণ করা এবং অহেতুক বিতর্ক, অহংকার ও অজ্ঞতা থেকে দূরে থাকা।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!