মো: আসাদুজ্জামান, বরগুনা প্রতিনিধি :
সমাজ তথা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হলো মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা। আর সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় আইন সহায়তা ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই। একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দরিদ্র, নিপীড়িত ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার সমূহের নিশ্চয়তা বিধান করা। এ কারণে আইনগত সহায়তা ও মৌলিক অধিকার একটি অপরটির পরিপূরক।
“দ্বন্দ্বে কোনো আনন্দ নাই, আপস করো ভাই-লিগ্যাল এইড আছে পাশে, কোনো চিন্তা নাই” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় বরগুনায় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা, জেলা কমিটির আয়োজনে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে জেলা দায়রা জজ আদালত চত্বর থেকে একটি র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে শেষ করে জগন্নাথ পাঁড়ে স্মৃতি মঞ্চে আলোচনা সভায় মিলিত হন।
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন- সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’র জেলা কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুর রহমান।
সহকারী জজ মোঃ রানা শেখ ও সহকারী জজ সেলিনা আক্তার’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল আলম, বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ ওসমান গনি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( এডিএম, উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) সজল চন্দ্র শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) মোঃ জহিরুল ইসলাম হাওলাদার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মোঃ মাহবুবুল বারি আসলাম, সরকারি প্রকৌশলী (জিপি) অ্যাড. আবদুল মজিদ তালুকদার ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. মোঃ নুরুল আমিন।
আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ অনুতোষ বালা।
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষ্যে জেলার আইজীবী, সরকারি দপ্তর’র প্রধানগণ ও বেসরকারি দপ্তরের মধ্যে সংগ্রামসহ অন্যান্য দপ্তরের প্রতিনিধিগণ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২০২৫ সালে সেরা প্যানেল আইনজীবী নির্বাচিত হওয়ায় অ্যাড. এ,কিউ ফারুককে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।
এ আলোচনা সভায় সুবিধাভোগী শিল্পী রানী তাঁর সমস্যা ও সমাধানের বিষয়টি সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। একই সাথে সরাসরি মামলায় না গিয়ে লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে অসহায়, নিপিড়ীত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সমস্যার সমাধান করার জন্য অনুরোধ করেন এই সুবিধাভোগী ব্যক্তি।
সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে একমাত্র আইন আদালতের মাধ্যমেই মানুষ তার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখেই গড়ে তোলা হয়েছে জাতীয় আইনগত সহায়তা কেন্দ্র।
মামলার জটিলতা এড়াতে এই সংস্থাটি খুব সুন্দর ও সঠিকতা যাচাইয়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে। এর জন্য প্রতিটি জেলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একজন সিনিয়র সহকারী জজকে নিয়োগ করা হয়ে থাকে। তার কাছে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে নোটিসের মাধ্যমে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে হাজির করে উভয় পক্ষের কথাকে ভিত্তি করে প্রয়োজনে সরেজমিনে গিয়ে উঠান বৈঠক করে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে সমস্যার সমাধান করা হয়।
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালন করেই নয়, বরং এর মূল লক্ষ্য অর্জণে আইনের সাথে জড়িত সকল কর্তা-ব্যক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে। সমস্যা সমাধানে নিজ উদ্যোগে কাজ করতে হবে। জেলা আইনগত সহায়তা কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে সচেষ্ট থেকে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতাই পারবে এ সংস্থার মূল লক্ষ্যে পৌঁছাতে। এমনটাই আশা করছেন সুশীল সমাজের মানুষ।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!