গতকাল রাতে বেলগ্রেডের রেড স্টার স্টেডিয়ামে শেষ বাঁশির পর, সিবিএস স্পোর্টসের ম্যাচ–পরবর্তী বিশ্লেষণে উঠেছিল প্রশ্ন—বার্সেলোনায় কি নতুন যুগের শুরু হয়েছে? কোচ হান্সি ফ্লিকের অধীনে বার্সা কি নতুন রূপে ফিরে আসছে? ফরাসি কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরির মতে, ফ্লিকের এই সাফল্যের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন জাভি হার্নান্দেজ। লামিনে ইয়ামালসহ বর্তমান দলের একাধিক খেলোয়াড়কে মূল দলে তুলে এনে জাভি ইতিমধ্যে বার্সার জন্য একটি মজবুত ভিত্তি তৈরি করেছেন। দুই বছর ধরে একসঙ্গে খেলার ফলে বার্সার খেলায় স্বাভাবিকভাবেই এক ছন্দের ধারাবাহিকতা এসেছে, যা প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করছে।
চ্যাম্পিয়নস লিগে গতকাল রেড স্টার বেলগ্রেডকে তাদের মাঠে ৫-২ গোলে হারিয়েছে বার্সা। এই ফলাফলই যেন ফ্লিকের নেতৃত্বে নতুন যুগের বার্তা দিচ্ছে। ২০২১ সালে লিওনেল মেসির বিদায়ের পর নতুন প্রজন্মকে ঘিরে একটি নতুন যুগ শুরু হওয়ার প্রতীক্ষায় ছিল বার্সা। গত মৌসুমে জাভির অধীনে লা লিগা শিরোপা জয় সেই নতুন যুগের ভূমিকা বলা যেতে পারে, আর এবার ফ্লিকের অধীনে যেন সেই যুগের উন্মেষ ঘটেছে। কেউ কেউ বলছেন, এখন বার্সার স্লোগান হতে পারে—‘গোল চাই, গোল ছাড়া কিছু নয়!’
তাদের ধারাবাহিক গোলমুখী আক্রমণ নতুন ইতিহাস গড়ছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর লা লিগায় ওসাসুনার বিপক্ষে ৪-২ গোলে পরাজয়ের পর, পরবর্তী ৭ ম্যাচে বার্সা প্রতিটি ম্যাচেই অন্তত ৩টি করে গোল করেছে। মেসির পর এমন ধারাবাহিক গোল উৎসব বার্সা ২০১৭ সালের পর দেখেনি। আর মেসিহীন টানা ৭ ম্যাচে ন্যূনতম ৩ গোল করার এমন নজির বার্সার ইতিহাসে ১৯৬০ সালের পর এবারই প্রথম। ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় টানা তিন ম্যাচে ন্যূনতম ৪টি করে গোল করাও ১৯৫৯-৬০ মৌসুমের পর এই প্রথম।
এই মৌসুমে ১৬ ম্যাচে বার্সার গোল সংখ্যা ৫৫, যা প্রতি ম্যাচে গড়ে ৩.৪ গোল। ফ্লিকের ভাষায়, এই পারফরম্যান্স বার্সার ‘নিজস্ব ভাষা’ হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ফ্লিক বলেছেন, ‘দলের পারফরম্যান্স সত্যিই দারুণ। আমি খুব উপভোগ করছি এবং ফলাফলগুলোই সবকিছু প্রকাশ করে দিচ্ছে।’
ফ্লিক আরও জানান, তাঁর দলের মানসিকতা খুবই শক্তিশালী। সবাই ফুটবল খেলা ও যেকোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়তে ভালোবাসে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই ফর্ম ধরে রাখতে চাই এবং সে জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি।’
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!