ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যখন উত্তেজনার আগুন জ্বলছে, তখন ওমানের মাসকাটে এক টুকরো মাঠে মুখোমুখি হলো দুই দেশের হ্যান্ডবল দল। বৃহস্পতিবার (৯ মে) অনুষ্ঠিত হলো দশম এশিয়ান বিচ হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপের বহুল আলোচিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। যুদ্ধাবস্থার ছাপ পড়েছে মাঠেও। ম্যাচে ভরাডুবি হয়েছে ভারতের—২-০ সেটে হেরে যায় তারা।
প্রথম সেটে পাকিস্তান জয় পায় ৩৪-৬ এবং দ্বিতীয় সেটে ৩৬-৭ ব্যবধানে। নয় দলের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টে ‘বি’ গ্রুপে ছিল ভারত ও পাকিস্তান।
এদিকে সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক যখন তলানিতে, তখন এই ম্যাচ নিয়ে শুরু থেকেই ছিল অনিশ্চয়তা।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাচে ভারতের খেলোয়াড়েরা কালো বাহুবন্ধনী পরে প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করলেও আয়োজকেরা তা খুলে ফেলতে বলেন এবং সতর্ক করেন—এ ধরণের কর্মকাণ্ড করলে দলকে টুর্নামেন্ট থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে।
ভারতীয় হ্যান্ডবল ফেডারেশনের (এইচএফআই) নির্বাহী পরিচালক আনন্দেশ্বর পান্ডে বলেন, আন্তর্জাতিক হ্যান্ডবল ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ বয়কট করলে ১০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা এবং দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা জুটত ভারতের। তাই চাপে পড়ে খেলতে হয়েছে। তার ভাষায়, “এশিয়ান হ্যান্ডবল ফেডারেশন সাফ জানিয়ে দেয়, খেলায় অনুপস্থিতি অলিম্পিক চার্টারের চেতনার পরিপন্থী হবে।”
ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থেকেও নির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে, এই যুদ্ধাবস্থার প্রতিক্রিয়ায় একই দিনে ভারতে আইপিএল ও পাকিস্তানে পিএসএল স্থগিত হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়া কাপ ক্রিকেটও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এমনকি আইসিসির ভবিষ্যৎ টুর্নামেন্টগুলোতেও ভারত-পাকিস্তানকে এক গ্রুপে না রাখার আলোচনা চলছে।
তবে হ্যান্ডবলের বিশ্বমঞ্চে এগিয়ে যেতে হলে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের বাধা পেরোতেই হবে। টুর্নামেন্টের ফাইনাল ১৫ মে। সেখানে চ্যাম্পিয়ন দল সুযোগ পাবে ২০২৬ সালের বিচ হ্যান্ডবল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার।
এখন দেখার বিষয়—পরবর্তী ধাপে আবার যদি ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়, তবে ভারতীয় দল আদৌ মাঠে নামে কিনা
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!