ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়তে আসা চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক বছরে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ২০২৪ সালে যেখানে ৯ জন চীনা শিক্ষার্থী ঢাবিতে ভর্তি হয়েছিলেন, চলতি ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ জন। এর আগের বছর, ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৬ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের বাংলা বিভাগে এই শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন। মঙ্গলবার ঢাবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনান মিনজু বিশ্ববিদ্যালয় ও বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা বিনিময়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক (MoU) রয়েছে। এসব চুক্তির আওতায় এবং চীন সরকারের বৃত্তি সহায়তায় ঢাবির ১৮ জন শিক্ষার্থী এ বছর চীনে পড়তে গেছেন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৭ জন।
চিকিৎসা গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিতে সম্প্রতি ঢাবির প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ চীনের ইউনান পিকিং ক্যানসার হাসপাতাল এবং কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
চীনা শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার সমাধানে ঢাবির স্যার পিজে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলে ১০টি কক্ষের একটি বিশেষ ব্লক তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, ছাত্রীদের আবাসন সংকট দূর করতে চীন সরকারের অর্থায়নে নির্মিত ‘বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী হল’ শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে।
চীনের আরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেশনাল মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য শিক্ষার্থী পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আগস্টে আরও চীনা শিক্ষার্থী ঢাবিতে দুই সেমিস্টারের জন্য আসবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। নতুন সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য উভয় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আলোচনা চলছে।
এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখানকার প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী চীনা ভাষা শেখার পাশাপাশি দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কেও জ্ঞান অর্জন করছেন।
গত বছর নভেম্বরে ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান চীন সফরে গিয়ে ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন। ভাষা ও সংস্কৃতির যৌথ উদ্যোগ নিয়ে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যায় তখন। ১৯ এপ্রিল চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল ঢাবি সফর করে একাডেমিক বিনিময় সভায় অংশ নেন।
এই ক্রমবর্ধমান একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার ভিত্তি গড়ে তুলবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!