কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ বন্দুক হামলার জেরে যখন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক তপ্ত অবস্থায় রয়েছে, তখন হঠাৎ করেই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। শনিবার (৩ মে) পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ৪৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর দাবি করে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এই পরীক্ষিত ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম ‘আবদালি অস্ত্র ব্যবস্থা (এডব্লিউএস)’ এবং এটি ‘ইন্দুস’ নামের সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে উৎক্ষেপণ করা হয়। ইসলামাবাদ বলছে, এই মহড়া ছিল সেনাবাহিনীর অপারেশনাল সক্ষমতা যাচাই এবং ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত নেভিগেশন সিস্টেমসহ অন্যান্য কারিগরি দক্ষতার প্রমাণ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ‘গুরুতর উসকানি’ হিসেবে বিবেচনা করতে পারে নয়াদিল্লি। বিশেষ করে এমন সময়, যখন দুই দেশের সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা বাড়ছে এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে একাধিকবার অস্ত্রবিরতির লঙ্ঘন হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও একজন নেপালি নাগরিক নিহত হন। এই হামলার পর ভারতজুড়ে পাকিস্তানবিরোধী ক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে। ভারতীয় জনগণের একাংশ সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের দাবি জানায়। পরিস্থিতির আরও উত্তেজক মোড় নেয় যখন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ দাবি করেন, ভারত ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে। তবে সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত এমন কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।
হামলার ঘটনার পর ভারত একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নেয়। তারা পাকিস্তানের সঙ্গে ‘সিন্ধু নদ পানিবণ্টন চুক্তি’ বাতিল করে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে দেয়। এমনকি দেশটিতে থাকা পাকিস্তানিদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় ভারত সরকার। জবাবে পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘সিমলা চুক্তি’ বাতিলের ঘোষণা দেয়।
এই ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম অবনতি দেখা দিয়েছে। ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে এবং পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজের জন্য ভারতের জলসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!