চুয়াডাঙ্গায় আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রামক চর্মরোগ স্ক্যাবিস। প্রতিদিন সদর হাসপাতালে ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু, নারী ও বয়স্কসহ সব বয়সের মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ছোঁয়াচে চর্মরোগ স্ক্যাবিস। এক পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অল্প সময়ের মধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে পুরো পরিবারে। প্রতিদিন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে স্ক্যাবিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, নতুন ও পুরোনো ভবনের করিডোর ও বারান্দাজুড়ে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে লম্বা লাইন, ভেতরে প্রবেশের অপেক্ষায় অসংখ্য রোগী। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন স্ক্যাবিস ও খোস–পাঁচড়াসহ বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রোগীদের অনেকেই জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরে চুলকানি, ফুসকুড়ি ও ব্যথার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কেউ কেউ একাধিকবার চিকিৎসা নেওয়ার পরও উপসর্গ কমছে না। সদর উপজেলার মোছা. রিনা বেগম বলেন, “প্রথমে ছেলেটার হাতে চুলকানি হয়েছিল, এখন পুরো পরিবার আক্রান্ত। রাতে ঘুমানোই কষ্টকর হয়ে গেছে।”
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. লাইলা শামীমা শারমিন বলেন, “স্ক্যাবিস দ্রুত সংক্রমিত হলেও এটি প্রতিরোধযোগ্য। আক্রান্ত ব্যক্তির পাশাপাশি পরিবারের সবাইকে একই সময়ে চিকিৎসা নিতে হবে, না হলে সংক্রমণ পুনরায় ফিরে আসে।”
তিনি আরও জানান, গরম ও বর্ষাকালে এই রোগের প্রকোপ বেশি থাকে। অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিয়ে ভুল চিকিৎসা করেন, ফলে জটিলতা দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে কিডনি ও ত্বকের জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে অক্টোবরের শেষ দিকে প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, “স্ক্যাবিস ও দাউদ— উভয়ই সংক্রামক রোগ। আর্দ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় সংক্রমণ বেড়েছে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি এখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!