আইবিডি বা ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ হলো অন্ত্রের একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনিত রোগ। এটি দুই ধরনের হয়ে থাকে: ক্রোনস ডিজিজ এবং আলসারেটিভ কোলাইটিস।
ক্রোনস ডিজিজ
ক্রোনস ডিজিজ মুখ থেকে পায়ুপথ পর্যন্ত যেকোনো অংশে হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি ক্ষুদ্রান্ত্রের শেষ অংশে (ইলিয়াম) এবং বৃহদন্ত্রের প্রথম অংশে (সিগমায়েড কোলন) হয়। ক্রোনস ডিজিজের প্রদাহ অন্ত্রের পুরো প্রাচীরের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ক্রোনস ডিজিজের লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হলো: পাতলা পায়খানা,পেটব্যথা,ওজন হ্রাস,রক্তমিশ্রিত পায়খানা,খাদ্যনালি সরু হয়ে পেট ফুলে যাওয়া,খাদ্যনালি ও মলদ্বারে ফিস্টুলা,রোগীর রক্তশূন্যতা, অপুষ্টি ইত্যাদি দেখা দেওয়া,শরীরে পানি আসতে পারে,মুখে ঘা,গিরা ব্যথা ও ফোলা,চোখে ও ত্বকে প্রদাহ
আলসারেটিভ কোলাইটিস
আলসারেটিভ কোলাইটিস শুধুমাত্র বৃহদন্ত্রেই হয়। আলসারেটিভ কোলাইটিসের প্রদাহ অন্ত্রের (গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট) অভ্যন্তরীণ আস্তরণে থাকে।
আলসারেটিভ কোলাইটিসের লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হলো: দীর্ঘ দিন ধরে রক্তমিশ্রিত পাতলা পায়খানা,তলপেটে ব্যথা,কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,মলদ্বারে ব্যথা
রোগ নির্ণয়
আইবিডি রোগ নির্ণয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে: রক্ত পরীক্ষা,মল পরীক্ষা,কোলনস্কপি,আইলিওস্কপি,এন্টেরোস্কপি,টিস্যু বায়োপসি পরীক্ষা,বেরিয়াম এক্স-রে,এমআর এন্টারোগ্রাফি
চিকিৎসা
আইবিডি দীর্ঘমেয়াদি রোগ হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে একে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শুরুতেই রোগ নির্ণয় করা গেলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়। এর ফলে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা ও জটিলতা কমানোও সম্ভব হয়।
আইবিডির চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলি হলো:কর্টিকোস্টেরয়েড,ইমিউনোসপ্রেসেন্ট,প্রোটিওজ ইনহিবিটর,অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ
আইবিডির চিকিৎসায় সার্জারিরও প্রয়োজন হতে পারে। সার্জারির মাধ্যমে আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা হয়।
প্রতিরোধ
আইবিডির কোনো নির্দিষ্ট প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেই। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে আইবিডির ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে: স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া,পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাওয়া,ধূমপান না করা,মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!