বলিউডের রুপালি পর্দায় তাঁকে এক নামে না চিনলেও, তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলো আমাদের মনে অমলিন। তিনি অরুণা ইরানি—নায়িকার ছায়ায় দাঁড়িয়ে গল্পের আলো হয়ে ওঠা এক অনন্য শিল্পী। আজ ৩ মে, এই প্রবীণ অভিনেত্রীর জন্মদিনে ফিরে দেখা যাক তাঁর জীবন ও সংগ্রামের গল্প।
দারিদ্র্যের ভেতর থেকে আলোর পথে
১৯৪৬ সালের ৩ মে, মুম্বাইয়ের এক পার্সি পরিবারে জন্ম অরুণার। আট ভাইবোনের সংসারে টানাপোড়েন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। পড়াশোনা থেমে যায় ষষ্ঠ শ্রেণিতেই। মাত্র ৯ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে বলিউডে যাত্রা শুরু করেন ‘গঙ্গা যমুনা’ (১৯৬১) ছবির মাধ্যমে। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অভিনয় করেছেন ৫০০’র বেশি সিনেমায়, হিন্দি ছাড়াও কন্নড়, গুজরাটি ও মারাঠি ভাষার ছবিতেও সমান সাবলীল ছিলেন তিনি।
নায়িকা নন, চরিত্রের হৃদয় ছিলেন তিনি
‘ক্যারাভান’ ছবির খলচরিত্র দিয়ে পেয়েছিলেন প্রথম ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন। ‘বেটা’সহ বহু ছবিতে সেরা পার্শ্ব-অভিনেত্রীর পুরস্কার জয় করেছেন। বলিউডে যেখানে চরিত্রাভিনেত্রীদের দাম কম, সেখানেই নিজেকে ভিন্নমাত্রায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন অরুণা।
ছোট পর্দায়ও নিজের ছাপ রেখেছেন
৯০ দশকের শেষ দিকে টেলিভিশনের পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। 'দেশ মে নিকলা হোগা চাঁদ'সহ জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনেত্রী ও প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন।
প্রেম, বিচ্ছেদ ও একাকিত্ব
বলিউডের বিখ্যাত কৌতুক অভিনেতা মেহমুদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এক সময় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। গোপনে বিয়ের গুঞ্জন, সম্পর্কের টানাপোড়েন, সব মিলিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও ছিল রঙিন এবং জটিল। পরবর্তীতে পরিচালক কুকু কোহলিকে বিয়ে করলেও, তিনিও ছিলেন বিধুর।
সম্পর্ক ও সমাজ নিয়ে খোলা মন
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক হলে সমাজ মেয়েদেরই দোষ দেয়, কিন্তু কেন?” হেমা মালিনী ও ধর্মেন্দ্রর উদাহরণ দিয়ে বলেন, "ভালোবাসা দোষ নয়।"
সাম্প্রতিক অবস্থা
মাত্র কয়েক মাস আগেই ব্যাংককে শপিং করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। হুইলচেয়ারে ফিরেছেন দেশে। ২০২৪ সালে ‘ঘুড়চাডি’ সিনেমায় সঞ্জয় দত্ত ও রাবিনা ট্যান্ডনের সঙ্গে দেখা গেছে তাঁকে।
আজ জন্মদিনে অরুণা ইরানিকে শ্রদ্ধা জানাই—তাঁর মতো শিল্পী চরিত্রের ছায়ায় থেকেও কিভাবে পর্দা দখল করে, সেই অনন্য উদাহরণ।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!