অনলাইনে ইলিশ বিক্রির নামে ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। চাঁদপুরে ইলিশ মাছের চাহিদা ও সস্তা দামের লোভ দেখিয়ে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে একটি প্রতারক চক্র। প্রশাসনের পদক্ষেপ সত্ত্বেও প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
কয়েকদিন আগে চাঁদপুর মাছঘাটে ইলিশ কিনতে এসে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ঢাকা থেকে আসা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, "অনলাইনে লোভনীয় অফার দেখে চাঁদপুরের মাছঘাটে আসলাম, কিন্তু এসে দেখি মাছের দাম অনেক বেশি। অনলাইনে দেখানো দামের সঙ্গে কোনো মিল নেই।"
আরেক ক্রেতা জাহান পপি জানান, "আমি ঢাকা থেকে ইলিশ ক্রয় করতে চাঁদপুর এসেছি। কিন্তু এখানকার দাম আমাদের স্থানীয় বাজারের চেয়ে অনেক বেশি।"
চাঁদপুর মাছঘাটের ইলিশ বিক্রেতা নূরে আলম বলেন, “এখানে প্রতিদিনই ইলিশ আসে, কিন্তু একটি প্রতারক চক্র অনলাইনে কম দামে ইলিশ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের ঠকায়। তারা মাছের টাকা নিয়ে মাছ সরবরাহ করে না।”
প্রতারণা রোধে চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা ৪১টি প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন। এ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বাইরে ইলিশ কিনলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন এই তালিকা প্রকাশ করেন।
তালিকায় ইলিশ বিক্রির ৪১টি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজ, ইলিশ ভাইয়া চাঁদপুর, ইলিশ তনয়া, রূপালী বাজার, মাছ বিচিত্রা, অর্গানিক ভাইয়া, বহরিয়া ফিস, চাঁদপুরের ইলিশ.কম, চাঁদ মোহনা ফিস, ইলিশেগুড়ি, চাঁদপুর ইলিশ, সজিব ইলিশের বাজার, ইনটাইম ম্যানেজমেন্ট, হাতুড়ে.কম, চাঁদপুর ইলিশ বাজার, শাহীন ইলিশ ঘর, চাঁদপুর ফিস, মেসার্স আলম ট্রেডার্স, ফ্রেশ মৎস্য ভান্ডার, তাজা ফিশ, রারজানা আক্তার, চাঁদপুর মাছের বাজার, এক্সেপশনাল টি অ্যান্ড প্রোডাক্ট, পঙ্খিরাজ, নগদ বাজার অনলাইন শপিং, পাঁচ মিশালী, ইলিশ বাড়ি, ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর, ঢালী মৎস্য আড়ৎ, চাঁদপুর রূপালী ইলিশ, চাঁদপুরের রূপালী ইলিশের বাজার ২.০, মাছের মেলা, চাঁদপুর ইলিশ বাজার, চাঁদপুর তাজা ইলিশের বাজার, চাঁদপুরের ইলিশ, ফ্রেস পণ্য, আসসুন্নাহ হালাল উপার্জন, রুহামা ফুড, তাজা ইলিশ ও ঐশ্যি বাজার।
সহকারী পরিচালক নুর হোসেন আরও জানান, "অনলাইনে ইলিশ কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বাইরে ইলিশ ক্রয় করা থেকে বিরত থাকুন, যাতে প্রতারণার শিকার না হন।"
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় জানান, "যেসব ফেসবুক পেজ জেলা মৎস্য বণিক সমিতির সদস্যদের, সেগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকার বাইরে কোনো পেজ থেকে ইলিশ কিনতে গেলে প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেউ প্রতারিত হলে থানায় অভিযোগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।"
প্রশাসনের এই উদ্যোগের মাধ্যমে ইলিশ ক্রয়ে ক্রেতাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। তবে ক্রেতাদেরও সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!