ইন্দোনেশিয়ার মসজিদ কাউন্সিল (ডিএমআই) ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ১০টি আধা-স্থায়ী মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি ডিএমআই-এর সভাপতি ইউসেফ কালা এক বিবৃতিতে এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, "দীর্ঘদিন ধরে সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের লক্ষ্য। এই মসজিদগুলো ফিলিস্তিনিদের ইবাদতের জন্য একটি নিরাপদ স্থান হিসেবে কাজ করবে এবং তাদের জন্য মানসিক শক্তি যোগাবে।" ইউসেফ কালা আরও জানান, আসন্ন রমজানে কিছু মসজিদ উদ্বোধনের লক্ষ্যে তারা হামাসের প্রতিনিধিদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করছেন, যাতে এই কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।
গাজার ধ্বংসস্তূপে মানবিক বিপর্যয়
গত ১৫ মাসে ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় গাজা উপত্যকার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংসের পাশাপাশি ধ্বংস হয়েছে মসজিদ, গির্জাসহ অসংখ্য উপাসনালয়।
ফিলিস্তিনি এনডোমেন্টস মন্ত্রী হাতেম আল-বাকরি জানিয়েছেন, ১৯৪৮ সাল থেকে ইসরায়েলি দখলদার শাসকদের বর্বরতার শিকার হতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। তিনি আরও উল্লেখ করেন, "গাজার পশ্চিম তীরের ৬০% মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮৮০টিরও বেশি মসজিদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে ১০০০ বছরেরও পুরনো ঐতিহাসিক মসজিদ।"
ডিএমআই-এর মতে, যুদ্ধবিরতি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য নতুন আশা ও শান্তির আলো জ্বালানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইন্দোনেশিয়ার এই উদ্যোগকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন ও সহানুভূতির নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ
আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, মসজিদে হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। অথচ গাজায় ২০০টিরও বেশি মসজিদ এবং তিনটি গির্জা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। ডিএমআই-এর এই পদক্ষেপ শুধু মসজিদ নির্মাণ নয়, বরং যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষদের জন্য নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখার একটি প্রচেষ্টা।
গাজার শরণার্থী শিবিরগুলোতে নতুন মসজিদ নির্মাণের এই উদ্যোগ কেবল উপাসনালয়ের পুনর্নির্মাণ নয়, বরং ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি নতুন সূচনা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!